স্বাস্থ্য

শনাক্তের বাইরে থাকছেন দেশের ৯০ শতাংশ যক্ষ্মা রোগী

দেশে প্রতি বছর ৩৮ হাজার মানুষের মৃত্যু হয় যক্ষ্মায়। এরপরও যক্ষ্মায় আক্রান্ত ৯০ শতাংশ মানুষ থেকে যায় শনাক্তের বাইরে। যক্ষ্মা রোগ নির্ণয় কখনো খুব সহজ আবার কখনো খুবই কঠিন। ফলে রোগী ব্যবস্থাপনায় বিভিন্ন সময় অপ্রত্যাশিত ভুল এড়াতে শুধু এক্স–রে দেখে ওষুধ না দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট সব পরীক্ষা করিয়ে নিশ্চিত হয়ে এরপরই ওষুধ দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

‘পিএইচএ গ্লোবাল সামিট–২০২৪’ শীর্ষক নয় দিনের সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার ইউনাইটেড কনভেনশন সেন্টারে বিশেষজ্ঞরা এ তথ্য ও পরামর্শ দেন।

বিশেষজ্ঞরা বলেন, যক্ষ্মা শনাক্তে চিকিৎসককে দক্ষ হতে হবে। একই সঙ্গে শনাক্তে চিকিৎসকদের যথেষ্ট সতর্ক হতে হবে। এ ছাড়া এক্স–রে, আলট্রাসাউন্ড, এমআরআই, সিটি স্ক্যান করে শরীরের যেকোনো অংশ কীভাবে ছোট ছোট ভাগে পর্যবেক্ষণ করা যায়, সেসব বিষয় উপস্থাপন করা হয়। রেডিওলজির ব্যবহার নিয়ে যেসব ভুল ব্যাখ্যা আছে সেগুলো বিশ্লেষণ করেন তারা।

আল্ট্রাসনোগ্রাম পদ্ধতির মাধ্যমে রোগ নির্ণয় সম্পর্কে তথ্য উপস্থাপন করে বিশেষজ্ঞরা এটি এক্স–রের চেয়ে কম ঝুঁকিপূর্ণ। হৃদ্‌রোগ, তলপেট এবং ফুসফুসের বিভিন্ন রোগ আল্ট্রাসনোগ্রামের মাধ্যমে সহজে শনাক্তের পদ্ধতি হাতে কলমে শেখান। প্রেজেন্টেশনে তারা কেস স্টাডি ভিত্তিক অভিজ্ঞতা বিনিময় করেন। এ সময় প্রশিক্ষণগ্রহণকারীদের সনদ দেওয়া হয়।

এই সেশনে প্ল্যানেটারি হেলথ একাডেমিয়ার (পিএইচএ) চেয়ারপারসন ডা. তাসবিরুল ইসলাম, পিএইচএর রেডিওলজি ফ্যাকাল্টি লিড ডা. সাদিয়া সুলতানা, সিসিএম ফ্যাকাল্টি লিড অধ্যাপক আয়েশা শিকদার, কার্ডিয়াক হসপিটাল অ্যান্ড রিসাস সেন্টারের সহযোগী অধ্যাপক ডা. নুসরাত গফুর, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ডা. হেনা খাতুন, এভার কেয়ার হাসপাতালের সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. জাফর ইকবাল পৃথক বিষয়ে প্রেজেন্টেশন দেন।

সম্মেলনের মূল পর্ব শুরুর আগে আগামী তিন দিনে লন্ডন কোর রিভিউ, ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইন অবসটেট্রিকস, সিস্টেম্যাটিক রিভিউ অব মেডিকেল লিটারেচার, ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন প্রেডিয়াট্রিকস, মেকানিক্যাল ভেন্টিলেশন, হেমোডায়ালাইসিস কোর্স, গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি ফর গাট এবং পেলভিক মোটিলিটি, ব্রেস্ট ক্যানসার প্রিসেটরসিপ ফর ইয়াং অনকোলোজিস্ট, কোর্স অন কমিউনিকেশন স্কিল নিউরোরেডিওলোজি ওয়ার্কশপ, স্ট্র্যাটেজিক কোর্স, মাস্টারক্লাস ইন লিভার ট্রান্সপ্লান্ট, আইআর ট্রান্সপ্লান্ট হেপাটোলজি, ইনাগুরেশন প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত হবে। আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত এসব কোর্সে আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন বিশেষজ্ঞরা তাদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরবেন।

প্রথমবারের মতো দেশে অনুষ্ঠিত হচ্ছে পিএইচএ গ্লোবাল সামিট। এ ধরনের আন্তর্জাতিক সম্মেলন শুধু বাংলাদেশে নয়; দক্ষিণ এশিয়ায় এ–ই প্রথম। নয় দিনের এই সম্মেলনে ২ হাজারের বেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, গবেষক, শিক্ষাবিদ ও মেডিক্যাল শিক্ষার্থী অংশ নিচ্ছেন।

সামিটে স্পিকার হিসেবে রয়েছেন আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন ৫০ জন চিকিৎসা বিজ্ঞানী এবং দেশের ১০০ জনেরও বেশি খ্যাতিমান চিকিৎসা বিশেষজ্ঞ। নয় দিনের সম্মেলনে থাকছে ৩০টির বেশি কোর্স এবং সায়েন্টিফিক সেশন।