ব্রাজিলের মহাবন আমাজনে শত শত আদিবাসী ও উপজাতি বাস করে। তেমনই একটি উপজাতি ইয়ানোমামি। এই উপজাতিদের একজন ১৫ বছর বয়সী কিশোর করোনাভাইরাসের লক্ষণ নিয়ে বৃহস্পতিবার ব্রাজিলে মৃত্যুবরণ করেছেন।
তাকে সাতদিন আগে ইয়ানোমামির উরারিকোয়েরা নদীর তীরবর্তী রেহেবে গ্রাম থেকে ব্রাজিলে নিয়ে আসা হয়েছিল চিকিৎসার জন্য। তখন থেকেই ওই কিশোরকে বোয়া ভিস্তার রোরাইমা জেনারেল হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়েছিল। তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ব্রাজিলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। মঙ্গলবার মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল ওই কিশোর কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত।
ব্রাজিলের উত্তরাঞ্চলের রেইনফরেস্ট ও পাহাড়ি এলাকা এবং ভেনেজুয়েলার দক্ষিণাঞ্চলের মধ্যবর্তী অংশে বসবাস করে ইয়ানোমামি উপজাতি। ‘সারভাইভাল ইন্টারন্যাশনাল’ নামের একটি সংগঠন, যারা আদিবাসী ও উপজাতিদের অধিকার রক্ষায় কাজ করে তাদের দেওয়া তথ্যমতে ইয়ানোমামি হচ্ছে দক্ষিণ আমেরিকার সবচেয়ে বড় এবং জনবিচ্ছিন্ন উপজাতি। বর্তমানে তাদের জনসংখ্যা ৩৮ হাজার।
সামাজিক পরিবেশবাদী সংস্থার (এসএইআই) দেওয়া তথ্যমতে করোনাভাইরাস এই উপজাতির মধ্যে ছড়িয়েছে স্বর্ণ সন্ধানী খনিশ্রমিকদের মাধ্যমে। যারা অবৈধভাবে ওই অঞ্চলে ইয়ানোমামি উপজাতিদের এলাকায় প্রবেশ করে নানান জায়গা খনন করে স্বর্ণ খুঁজছে। প্রায় ২০ হাজার খনিশ্রমিক ও প্রশ্রয়দাতা অনিয়ন্ত্রিতভাবে ওই অঞ্চলে যাতায়াত করে। তাদের মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে এখন ইয়ানোমামি উপজাতি হুমকির মুখে পড়েছে।
কারণ, করোনাভাইরাস খবুই ঝুঁকিপূর্ণ উপজাতিদের জন্য। তাদের জীবনাচরণ, খাদ্যাভ্যাসের কারণেই করোনাভাইরাসে অধিক ঝুঁকিতে রয়েছে তারা।
শুধু ইয়ানোমামি উপজাতিই নয়, অন্যান্য উপজাতিদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস। এর আগে আরো দুইজন উপজাতি প্রাণঘাতী এই ভারাইসে মারা গেছেন।
জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের দেওয়া তথ্যমতে, ব্রাজিলে বর্তমানে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১৮ হাজার ১৭৬। শুক্রবার পর্যন্ত সেখানে মারা গেছে ৯৫৭ জন।
ঢাকা/আমিনুল