অবরুদ্ধ গাজায় শতাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। হামলার মাত্রা এতোটাই ব্যাপক যে, মাত্র এক মিনিটে ৩০টি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। পরিস্থিতি যে কোনো সময় পূর্ণ মাত্রার যুদ্ধে রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ।
মঙ্গলবার ও বুধবার শতাধিক বিমান হামলা চালানো হয়। এসব হামলায় নিহত হয়েছে ৫৩ ফিলিস্তিনি। এদের মধ্যে ১৪ শিশু রয়েছে। নিহতদের মধ্যে একই পরিবারের পাঁচ সদস্যও রয়েছে। এদের মধ্যে দুই ভাই ছিল, যারা হামলার আগ মুহূর্তে স্ট্র নিয়ে খেলছিল। হামলায় বাড়িতে থাকা এক গর্ভবতী নারী ও তার এক সন্তান নিহত হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যসহ সারা মুসলিম বিশ্ব যখন এক মাস সিয়াম সাধনা শেষে ঈদ উদযাপনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে তখন গাজার সড়কগুলোতে লাশ নিয়ে চলছে শোকের মাতম।
পূর্ব জেরুজালেমের শেখ জারাহ জেলা থেকে ৭০টির বেশি ফিলিস্তিনি পরিবার উচ্ছেদের ঝুঁকির মুখে পড়ায় গত শুক্রবার বিক্ষোভ শুরু করে ফিলিস্তিনিরা। আল আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে পবিত্র রমজানের জুমাতুল বিদা এবং শবে কদরে যখন মানুষ নামাজে মগ্ন তখন তাণ্ডব চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। মুসল্লিদের ওপর রাবার বুলেট, কাঁদানে গ্যাসের শেল ও বোমা ছুড়ে তারা। এতে শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়। এর প্রতিশোধ নিতে গাজার শাসক দল হামাস রকেট হামলা চালায় তেল আবিবে। জবাবে মঙ্গলবার থেকে গাজায় বিমান হামলা চালাতে শুরু করে ইসরায়েল।
আল-জাজিরা অনলাইন জানিয়েছে, দুদিনের বিমান হামলায় গাজার তিনটি বহুতল ভবন ধ্বংস হয়ে গেছে। এর মধ্যে ১৪ তলার শরুক টাওয়ারটিতে বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের অফিস ছিল।
স্থানীয় সাংবাদিক ইয়ুমনা আল-সাইদ আল-জাজিরাকে বলেছেন, ‘সংবাদমাধ্যমের অফিস রয়েছে এমন ভবনগুলোকে হামলার লক্ষ্যবস্তু বানানোর মাধ্যমে ইসরায়েল সুস্পষ্ট বার্তা দিচ্ছে যে, তারা চায় না গাজা উপত্যকার সত্যিকারের পরিস্থিতি কোনো সংবাদমাধ্যম প্রকাশ করুক।’
বুধবার ইসরায়েলি বাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, গাজা ও খান ইউনিসে তাদের হামলায় হামাসের বেশ কয়েক জন শীর্ষ কমান্ডার নিহত হয়েছে। এবারই তারা ‘প্রথমবারের মতো এ ধরনের জটিল অভিযান’ পরিচালনা করেছে।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০১৪ সালের পর এই প্রথম তারা গাজায় বড় ধরনের হামলা চালাচ্ছেন।
দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, ইসরায়েলের শত্রুদের প্রতিরোধ করতে তার সরকার সবকিছু করবে।