আন্তর্জাতিক

হিজাব নিয়ে বিচারপতির সমালোচনা করায় অভিনেতা গ্রেপ্তার

স্কুলে মুসলিম শিক্ষার্থীদের হিজাব পরা নিয়ে আদালতে চলমান রিট শুনানি চলাকালে বিচারকের সমালোচনা করায় ভারতে এক অভিনেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিচারপতি কৃষ্ণা দিক্ষীতের সমালোচনা করায় দক্ষিণের রাজ্য কর্ণাটক থেকে চেতন কুমার নামের ওই অভিনেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

২০২০ সালের একটি ধর্ষণ মামলায় বিচারপতি কৃষ্ণা দিক্ষীতের মন্তব্যের সমালোচনা করে একটি টুইট করেছিলেন চেতন কুমার। তিনি লিখেছিলেন,‘‘চলতি সপ্তাহে কেএ (কর্নাটক) হাইকোর্টের বিচারপতি কৃষ্ণা দীক্ষিত ধর্ষণ মামলার আসামী রাকেশ বি-কে আগাম জামিন দিয়েছেন। তিনি দাবি করেছেন যে ‘ধর্ষণের পরে ঘুমানো ভারতীয় মহিলার পক্ষে অশোভন;’ নারীরা যখন ধর্ষণের শিকার হয় তখন এভাবে প্রতিক্রিয়া দেখায় না। যেটি ‘অনাকাঙ্খিত’ তা হল ২১ শতকে দিক্ষীতের এই সেকেলে রায় দৈন্যতার প্রকাশ।’’ 

হিজাব ইস্যুতে শুনানি চলাকালে বিচারপতি দিক্ষীতের মন্তব্যের সমালোচনা করে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি  চেতন কুমার ২০২০ সালের টুইটটি রিটুইট করে লিখেছেন, ‘আমি প্রায় দুই বছর আগে কর্ণাটক হাইকোর্টের সিদ্ধান্তের বিষয়ে এই টুইটটি করেছিলাম। একটি ধর্ষণ মামলায় সেই বিরক্তিকর মন্তব্য করলেন বিচারপতি কৃষ্ণা দীক্ষিত। এখন এই একই বিচারক নির্ধারণ করছেন সরকারি স্কুলে হিজাব গ্রহণযোগ্য কি না। তার কি প্রয়োজনীয় স্বচ্ছতা আছে?’

 চেতন কুমারের গ্রেপ্তার নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ব্যবহারকারীরা। মার্কিন নাগরিকত্ব পাওয়া চেতন কুমার হলেন দলিত (পূর্বে অস্পৃশ্য হিসাবে পরিচিত) অধিকার কর্মী। কর্ণাটকে বেশ কয়েকটি ডানপন্থী বিরোধী বিক্ষোভে জড়িত ছিলেন তিনি।

সমালোচকরা বলেছেন, তিনি প্রায়ই তার সামাজিক কাজের জন্য ডানপন্থীদের লক্ষ্যবস্তু হন। ব্রাহ্মণ সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে মন্তব্যের জন্য ইতোমধ্যে তিনি দুটি মামলার মুখোমুখি হয়েছেন।

প্রসঙ্গত, ১০ ফেব্রুয়ারি কর্ণাটকের প্রধান বিচারপতি ঋতুরাজ অবস্থি, বিচারপতি কৃষ্ণা দিক্ষীত ও বিচারপতি জেএম খাজিকে নিয়ে গঠিত তিন সদস্যের বেঞ্চে হিজাব নিয়ে রিটের শুনানি শুরু হয়। শুনানিতে আদালত শিক্ষার্থীদের আপাতত হিজাব বা যেকোনো ধরনের ধর্মীয় পোশাক পরা থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছে। যতদিন এ বিষয়ে মামলা চলছে, ততদিন ধর্মীয় পোশাক পরে শিক্ষার্থীদের স্কুল-কলেজে যাওয়া থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছে বেঞ্চ।