মাত্র দুদিন আগে তালেবানরা আফগানিস্তানে তাদের নিয়ন্ত্রণের দুই বছর পূর্তি উদযাপন করেছে। তবে দীর্ঘদিনের মিত্র এবং প্রতিবেশী পাকিস্তানের সাথে তাদের সম্পর্ক ক্রমশ খারাপ হচ্ছে। বৃহস্পতিবার আল-জাজিরা অনলাইন এ তথ্য জানিয়েছে।
আফগানিস্তান সীমান্তবর্তী পাকিস্তানের উপজাতীয় অঞ্চলে ভয়াবহ হামলার জন্য কাবুলকে দায়ী করছে ইসলামাবাদ। সর্বশেষ জুলাইয়ের শেষের দিকে বাজাউর জেলায় একটি আত্মঘাতী বোমা হামলায় ৫৪ জনেরও বেশি লোক নিহত হয়। সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আইএসআইএল (আইএসআইএস) এর সহযোগী - খোরাসান প্রদেশের ইসলামিক স্টেট (আইএসকেপি বা আইএসআইএস-কে) এর দায় স্বীকার করেছিল।
শীর্ষস্থানীয় পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের অভিযোগ, ক্ষমতাসীন তালেবান প্রশাসন সীমান্তে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলির চলাচল নিয়ন্ত্রণে যথেষ্ট ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
সদ্য সাবেক হওয়া পাক-পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি বাজাউরে হামলার কয়েক দিন পর বলেছিলেন, ‘আমরা আত্মরক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে কাজ করব। যদি আফগান কর্তৃপক্ষ কাজ না করলে অভ্যন্তরীণ (আফগানিস্তানের অভ্যন্তরে) পদক্ষেপ একটি বিকল্প হতে পারে তবে প্রথম বিকল্প নয়।’
পাকিস্তানি সেনাপ্রধান জেনারেল সৈয়দ আসিম মুনিরও বাজাউর হামলার এক সপ্তাহ পরে পাকিস্তানের মাটিতে হামলা পরিচালনায় ‘আফগান নাগরিকদের জড়িত’ থাকার নিন্দা জানিয়েছেন। একে ‘আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য ক্ষতিকর’ বলে অভিহিত করেছেন তিনি।
তালেবান অবশ্য পাকিস্তানের এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
তালেবানের মুখপাত্র জবিউল্লাহ মুজাহিদ বলেছেন, ‘আফগানিস্তানের ইসলামিক আমিরাত আবারও জোর দিয়ে বলেছে যে, তারা পাকিস্তানের উপর কোনো আক্রমণের পক্ষে নয় এবং আমরা কাউকে আফগানিস্তানের মাটি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে দেব না। তবে, পাকিস্তানের ভূখণ্ডের অভ্যন্তরে হামলা প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ করা আমাদের দায়িত্ব নয়।’
সন্ত্রাসবাদ বিরোধী গবেষক এবং যুক্তরাষ্ট্রের ক্লিমসন ইউনিভার্সিটির সহকারী অধ্যাপক আবিরা জাদুন আল-জাজিরাকে বলেছেন, ‘তালেবানকে নিষ্ক্রিয় বা সীমাবদ্ধ হিসেবে দেখা হোক না কেন, তালেবানের প্রতি পাকিস্তানের হতাশা ক্রমাগত বেড়েছে। ভুট্টো জারদারির সাম্প্রতিক বিবৃতিগুলোতে পাকিস্তানের এই হতাশাকে আরও দৃঢ়ভাবে ইঙ্গিত করছে, সম্ভবত প্রত্যাশা ছিল তালেবান তাদের সতর্কতা আরও গুরুত্ব সহকারে নিতে বাধ্য থাকবে।’