আন্তর্জাতিক

লোহিত সাগরে জাহাজ জব্দ করেছে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা

লোহিত সাগরে ব্রিটিশ মালিকানাধীন ও জাপানি কোম্পানি পরিচালিত একটি কার্গো জাহাজ জব্দ করেছে ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা। রোববার এই দাবি করেছে ইসরায়েল।

আন্তর্জাতিক সামুদ্রিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে হুথিদের এই ঘটনা ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইসরায়েল। একই সঙ্গে ইরানকে দায়ী করে ইসরায়েল বলেছে, এটি ইরানের সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ড। 

সোমবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। 

হুতি বিদ্রোহীরা জাহাজ আটক করার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। জাহাজটির মালিকানায় ইসরায়েলি সংযোগ রয়েছে বলে দাবি করেছেন তারা। হুতি গ্রুপের একজন মুখপাত্র বলেছেন, ‘ইসরায়েলি সংযোগ থাকায় জাহাজটি আটক করা হয়েছে। আমরা জাহাজের ক্রুদের সাথে ইসলামিক নীতি ও মূল্যবোধ অনুযায়ী আচরণ করছি।’

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের সাথে হামাসের যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে ইসরায়েলে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন হামলা চালিয়ে আসছে তেহরানের মিত্র হুথিরা।

সোমবার জাপান সরকারের শীর্ষ একজন মুখপাত্র নিপ্পন ইউসেন-চালিত জাহাজ ‘গ্যালাক্সি লিডার’ হুতিদের হাতে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আটককৃত জাহাজ ও এর ক্রুদের দ্রুত মুক্তি দিতে হুতিদের প্রতি আহ্বান জানানোর পাশাপাশি এ বিষয়ে সৌদিআরব, ওমান এবং ইরানের সাহায্যে চেয়েছে জাপান।

জাপানের চিফ ক্যাবিনেট সেক্রেটারি হিরোকাজু মাতসুনো এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘আমরা এই ধরনের কাজের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।’ ক্রুদের মধ্যে কোনো জাপানি নাগরিক নেই বলে জানান তিনি।

এলএসইজি ডেটা অনুসারে, গ্যালাক্সি লিডার জাহাজটির মালিকানা আইল অব ম্যান-হেডকোয়ার্টারড রে কার ক্যারিয়ারের অধীনে নিবন্ধিত একটি কোম্পানির, যেটি ইসরায়েলের তেল আবিবের রে শিপিংয়ের একটি ইউনিট।

জাপানের নিপ্পন ইউসেন কোম্পানি এক বিবৃতিতে বলেছে, জাহাজটিতে থাকা ফিলিপাইন, বুলগেরিয়া, ইউক্রেন, রোমানিয়া ও মেক্সিকোর ২৫ জন ক্রুর নিরাপত্তাসহ আরও তথ্য সংগ্রহের জন্য একটি টাস্ক ফোর্স গঠন করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির একজন মুখপাত্র বলেছেন, গাড়িবহনের কার্গো জাহাজটি কোনো পণ্য ছাড়াই ইউরোপ থেকে ভারতের দিকে যাচ্ছিল।

গত সপ্তাহে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা বলেছিল, তাদের যোদ্ধারা ইসরায়েলে হামলার পরিমাণ আরও বৃদ্ধি করবে। একই সঙ্গে লোহিত সাগর এবং বাব আল-মান্দেব প্রণালীতে ইসরায়েলি সব জাহাজকে লক্ষ্যবস্তু বানানোর হুমকি দেয় তারা।

যুক্তরাষ্ট্রের একজন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা বলেছেন, ‘আমরা লোহিত সাগরে জাহাজ জব্দের বিষয়ে অবগত এবং এই ঘটনা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি।’

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় বলেছে, একটি জাহাজ জব্দ করা হয়েছে। এই জাহাজ ইসরায়েলের মালিকানাধীন নয়। এমনকি এটি পরিচালনা কিংবা এতে ইসরায়েলি কোনো ক্রুও নেই। জাহাজটির নাম প্রকাশ করেনি ইসরায়েল।

নেতানিয়াহুর কার্যালয় বলছে, এটি আরেকটি ইরানি সন্ত্রাসবাদী কাজ; যা মুক্ত বিশ্বের নাগরিকদের বিরুদ্ধে ইরানের উত্তেজনা বৃদ্ধির ঘটনাকে তুলে ধরে। বিশ্বজুড়ে জাহাজ পরিচালনা রুটের নিরাপত্তার ক্ষেত্রেও এই ঘটনার প্রভাব রয়েছে।

তবে ইরানের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, জাহাজ নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার এই ঘটনার সঙ্গে তেহরান কোনোভাবে জড়িত নয়।