আন্তর্জাতিক

অসপ্রে যুদ্ধবিমান উড্ডয়ন স্থগিত করলো যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনী বলেছে, গত সপ্তাহে জাপান উপকূলে মার্কিন অসপ্রে ভি-২২ বিমানের মারাত্মক দুর্ঘটনার প্রেক্ষিতে তারা তাদের সামরিক বহরে এ বিমানের উড্ডয়ন স্থগিত করেছে। ওই দুঘর্টনায় ৮ জন নিহত হয়েছিল। 

বৃহস্পতিবার (৭) ডিসেম্বর এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। 

মার্কিন বিমান বাহিনীর স্পেশাল অপারেশন কমান্ড (এএফএসওসি) বুধবার (৬ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘প্রাথমিক তদন্তে ইঙ্গিত মিলেছে, সম্ভাব্য একটি যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। তবে এ ত্রুটির অন্তর্নিহিত মূল কারণ এই মুহূর্তে অজানা।’

রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, জাপানের রাজধানী টোকিও থেকে প্রায় ১,০৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে ইয়াকুশিমা দ্বীপের কাছে গত সপ্তাহে একটি মার্কিন অসপ্রে ভি-২২ যুদ্ধবিমান নিয়মিত প্রশিক্ষণ মিশনের সময় বিধ্বস্ত হয়। এতে ৮ জন মার্কিন সেনা নিহত হোন। এ ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রকে অসপ্রে বিমানের উড্ডয়ন বন্ধ রাখার আহ্বান জানায় জাপান। ‘নিরাপদ’ হিসেবে নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত, জাপানের আকাশে এ বিমানের উড্ডয়ন বন্ধ রাখার অনুরোধ জানানো হয়। 

অসপ্রে হলো হাইব্রিড উড়োজাহাজ, যা একইসঙ্গে হেলিকপ্টার ও বিমান হিসেবে কাজ করতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহিনী, মেরিন, নৌবাহিনী ও জাপানের প্রতিরক্ষাবাহিনীতে এমন বিমান রয়েছে। বোয়িং এবং বেল হেলিকপ্টার এ বিমানের নির্মাতা। বোয়িং-এর তথ্যমতে, যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের সামরিক বাহিনীতে কমপক্ষে ৪০০টি অসপ্রে বিমান রয়েছে।

দুর্ঘটনার পরপরই জাপান তাদের সামরিক বাহিনীর ভি-২২ অসপ্রে বিমানের উড্ডয়ন স্থগিত করে। যুক্তরাষ্ট্র প্রাথমিকভাবে বলেছিল, বিধ্বস্ত বিমানটি জাপানে মার্কিন যেই নৌঘাঁটির অন্তর্ভুক্ত সেখানে এটির উড্ডয়ন স্থগিত করা হয়েছে। কিন্তু এবার মার্কিন বিমান বাহিনী জানিয়েছে, অন্যান্য অসপ্রে বিমানগুলোও নিরাপত্তা পরীক্ষার পর আকাশ উড়বে। 

রয়টার্স বলছে, বিশেষ করে মারাত্মক দুর্ঘটনার পরে, মার্কিন সামরিক বাহিনীর জন্য সম্পূর্ণ নৌবহরকে গ্রাউন্ড করা অস্বাভাবিক নয়।

জাপানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বৃহস্পতিবার বলেছেন, তাদের অসপ্রে বিমান গ্রাউন্ডেড রয়েছে।

জাপানে অসপ্রে বিমান মোতায়েনের বিষয়টি বিতর্কিত। দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিম দ্বীপগুলোতে মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে ডজন খানেক অসপ্রে বিমান মোতায়ন রয়েছে। দুর্ঘটনাপ্রবণ হওয়ায় এ বিমান নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে উদ্বেগ রয়েছে।

ফ্লাইট সেফটি ফাউন্ডেশনের মতে, বিমানটি পরিচালনা বা পরীক্ষা করার সময় দুর্ঘটনায় অন্তত ৫০ জন কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। ২০০৭ সালে সামরিক বহরে এ বিমান যুক্ত হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত দুর্ঘটনায় ২০ জনের বেশি সেনা সদস্য নিহত হয়েছেন।

গত আগস্টে উত্তর অস্ট্রেলিয়ার উপকূলে নিয়মিত সামরিক মহড়ার সময় অসপ্রে বিমান বিধস্ত হয়ে তিনজন মার্কিন মেরিন সেনা নিহত হয়েছিলেন। ২০২২ সালে ন্যাটো প্রশিক্ষণ চলাকালীন সময়ে উত্তর নরওয়ের একটি প্রত্যন্ত অঞ্চলে অসপ্রে বিমান বিধ্বস্ত হয়ে চারজন মার্কিন সেনা নিহত হয়েছিলেন।