আন্তর্জাতিক

ইসরায়েলগামী জাহাজ দেখলেই হামলার হুমকি হুথিদের

ইসরায়েলগামী সব জাহাজে হামলার হুমকি দিয়েছে ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা। একইসঙ্গে আন্তর্জাতিক শিপিং কোম্পানিগুলোকে ইসরায়েলি বন্দরে কর্মকাণ্ড পরিচালনার ক্ষেত্রে সতর্কও করেছে গোষ্ঠীটি। খবর আল জাজিরার।

শনিবার এক বিবৃতিতে হুথি গোষ্ঠীর একজন মুখপাত্র বলেছেন, ‘যদি গাজা তার প্রয়োজনীয় খাদ্য ও ওষুধ না পায়, তাহলে লোহিত সাগরে ইসরায়েলি বন্দরগুলোর দিকে যাওয়া সমস্ত জাহাজ তাদের জাতীয়তা নির্বিশেষে আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হবে।’

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, এই আদেশ তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হবে।

আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, টানা দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় বোমাবর্ষণ চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। তাদের নির্বিচার হামলায় এখন পর্যন্ত ১৭ হাজার ৭০০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এছাড়াও প্রায় ৪৯ হাজার ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন। ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধে বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা বন্ধ না হওয়ায় মধ্যপ্রাচ্যে বৃহত্তর যুদ্ধের ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। এর মধ্যে ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে ইরান-সমর্থিত হুথি সশস্ত্র গোষ্ঠী লোহিত সাগরে জাহাজে হামলা চালিয়ে আঞ্চলিক সংঘাতের ঝুঁকিকে আরও বাড়িয়ে তুলছে।

সাম্প্রতিক সময়ে হুথিরা লোহিত সাগর এবং এর বাব আল-মান্দেব প্রণালীতে ইসরায়েলি-সংযুক্ত বেশ কয়েকটি জাহাজ আক্রমণ চালানোর পাশাপশি জব্দও করেছে। এই সমুদ্রপথ দিয়ে বিশ্বের বেশিরভাগ তেলবাহী জাহাজ যাতায়াত করে থাকে। এছাড়া হামাসের সঙ্গে সংঘাত শুরুর পর ইসরায়েলে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং সশস্ত্র ড্রোন নিক্ষেপও করেছে হুথিরা।

গত সপ্তাহে দক্ষিণ লোহিত সাগরের আন্তর্জাতিক জলসীমায় তিনটি বাণিজ্যিক জাহাজ হুথিদের আক্রমণের শিকার হয়। যা মার্কিন নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজকে এ ঘটনায় হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য করে। 

হুথি কর্মকর্তারা বলছেন, তাদের কর্মকাণ্ড ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থনের প্রদর্শন। অন্যদিকে ইসরাইল বলেছে, জাহাজে হামলা ‘ইরানের সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ড’ এবং এটি আন্তর্জাতিক সমুদ্র নিরাপত্তার জন্য হুমকি।

যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্য জাহাজে হামলার নিন্দা করেছে এবং হুথিদের সমর্থনে ভূমিকার জন্য ইরানকে দায়ী করেছে। তেহরান বলছে, তাদের মিত্ররা স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নেয়।

সামরিক বিশ্লেষকরা বলছেন, হুতি বিদ্রোহীরা ঘন ঘন হামলা শুরু করলে পাল্টা জবাব দিতে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধজাহাজগুলোর ওপর চাপ বাড়বে। সেটি হলে সেই সংঘাতে জড়িয়ে পড়তে পারে ইরানও। আর তাতে আরো বড় ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। বিশেষ করে ওই অঞ্চলে ইরান এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সরাসরি সংঘাতের আশঙ্কাও তৈরি হতে পারে।