আন্তর্জাতিক

রাম মন্দির উদ্বোধনের পর বেড়েছে মুসলিমদের ওপর হামলা

ভারতের মুম্বাইয়ের মিরা রোডের আশেপাশে ২১ বছর বয়সী মোহাম্মদ তারিক তার বাবার সাদা লোডিং অটো ক্যারিয়ারে কাজ করতেন। মঙ্গলবার হিন্দু জাতীয়তাবাদী সমাবেশে অংশগ্রহণকারীরা সড়কের মাঝখানে তার গাড়ি থামিয়ে দেয়। অল্পবয়সী ছেলেরা - যাদের বেশিরভাগই কিশোর - তারিকে টেনে নামায় গাড়ি থেকে। তারা তাকে ঘুষি ও লাথি মারে এবং লাঠিসোঁটা, পতাকার লাঠি এবং লোহার শিকল দিয়ে মারধর করে। তারিকের বাবা ৫৪ বছর বয়সী আব্দুল হক আল-জাজিরাকে জানান, তখন থেকেই তার ছেলে ‘আতঙ্কিত।’

সমাবেশে অংশগ্রহণকারীরা এলাকার বেশ কয়েকজন মুসলমানকে লক্ষ্য করে হামলা চালায়, তাদের দোকানে তাণ্ডব চালায় এবং ‘জয় শ্রী রাম’ (ভগবান রামের বিজয়) স্লোগান দেওয়ার সময় গাড়ি ভাঙচুর করে। 

সোমবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি উত্তর ভারতের প্রাচীন শহর অযোধ্যায় রাম মন্দিরের উদ্বোধন করেন। মন্দিরটি সেই জায়গায় তৈরি করা হচ্ছে যেখানে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত ১৬ শতকের বাবরি মসজিদ দাঁড়িয়েছিল। ১৯৯২ সালে হিন্দু অতি-ডানপন্থী জনতা মসজিদটি ভেঙে দিয়েছিল, দেশব্যাপী দাঙ্গা শুরু করেছিল। তারা দুই হাজারেরও বেশি লোককে হত্যা করেছিল, যাদের বেশিরভাগই মুসলমান।

মন্দিরের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মোদি বলেছিলে, ‘সময়ের চাকা ঘুরে গেছে...আমরা আগামী ১০০০ বছরের জন্য ভারতের ভিত্তি স্থাপন করছি। আমরা এই মুহূর্ত থেকে একটি সক্ষম, মহান, পবিত্র ভারত গড়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি।’

ভারতের পবিত্রতার ঘোষণা দেওয়ার পরপর বিহার রাজ্যে একটি মুসলিম কবরস্থানে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল, দক্ষিণ ভারতে একজন মুসলিম ব্যক্তিকে নগ্ন করে প্যারেড করানো হয়েছিল এবং জঙ্গি হিন্দুত্বের প্রতিনিধিত্বকারী একটি জাফরানি পতাকা মধ্য ভারতের একটি গির্জার উপরে উত্তোলন করা হয়েছিল।

মঙ্গলবারের হামলার পর ছেলেকে নিয়ে থানায় যাওয়ার পথে আব্দুল হক বলেন, ‘এই দেশটি আমার কাছে ক্রমশ অচেনা হয়ে যাচ্ছে- যেখানে মুসলমানরা আবর্জনার মতো। সেখানে অনেক লোক ছিল (মিরা রোড হামলার সময়) কিন্তু কেউ তাদের আমার সন্তানকে মারতে বাধা দেয়নি। এটা সমাজের জন্য লজ্জাজনক। এটা অন্ধদের শহর।’