আন্তর্জাতিক

ইঁদুরের ‘ভয়ে’ ৩ দিনের জন্য বিমানের উড্ডয়ন বাতিল

শ্রীলঙ্কার জাতীয় বিমান সংস্থা শ্রীলঙ্কান এয়ারলাইনস তিন দিনের জন্য একটি বিমানের উড্ডয়ন বাতিল করার পেছনে আজ মঙ্গলবার একটি ইঁদুরকে দায়ী করেছে। ভয়েস অব আমেরিকা এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের লাহোর থেকে ছেড়ে আসা শ্রীলঙ্কান এয়ারলাইনসের এয়ারবাস এ৩৩০ ফ্লাইটে একটি একটি ইঁদুর দেখা যায়। ইঁদুরটি বিমানের গুরুতর কোনো কিছু কামড়িয়ে ক্ষতি করেছে কি না, তা নিশ্চিত হতে অনুসন্ধান চালানো হয়।

বিমান সংস্থাটির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা বলেন, বিমানটি পুনরায় ফ্লাইট শুরু করেছে। তবে উড্ডয়ন বাতিলের কারণে পুরো সময়সূচির ওপর প্রভাব পড়েছে।

ওই কর্মকর্তা জানান, বিমানটি কলম্বোতে তিন দিনের জন্য গ্রাউন্ডেড ছিল। ইঁদুরের অস্তিত্ব আছে কি না, তা নিশ্চিত না করে বিমানটি ওড়ানো যায়নি। পরে ইঁদুরটিকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। 

ভয়েস অব আমেরিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বিমান সংস্থাটি ২০২৩ সালের মার্চের শেষে ১.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি লোকসান করেছিল। সরকারি বিমান সংস্থাটির বহরের ২৩টি বিমানের আরও তিনটি এক বছরেরও বেশি সময় ধরে গ্রাউন্ডেড রয়েছে। ইঞ্জিনগুলোর বাধ্যতামূলক মেরামতের জন্য সংস্থাটির কাছে কোনো বৈদেশিক মুদ্রা নেই।

এভিয়েশন মন্ত্রী নিমাল সিরিপালা ডি সিলভা সাংবাদিকদের বলেছেন, ইঁদুরটি ঋণের বোঝা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। যা এয়ারলাইনসটির দায়িত্ব নিতে আগ্রহী ‘কয়েকজন বিনিয়োগকারীর’ ভয়ের কারণ হতে পারে। 

ক্ষতি পোষাতে রাষ্ট্রীয় বিমান সংস্থাটি বিক্রির চেষ্টা চালাচ্ছে দেশটির সরকার। 

গত বছর শ্রীলঙ্কার ডলারের মজুত রেকর্ড সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে যাওয়ার পর দেশটি সাত দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ আর্থিক সংকটের পড়ে। এ ঘটনায় শ্রীলঙ্কা বিদেশি ঋণ খেলাপি হয়, বিক্ষোভের মুখে দেশটির তৎকালীন প্রেসিডেন্ট পদত্যাগ করেন। আর্থিক সংকটে বিপর্যস্ত শ্রীলংকাকে চার বছরে ২.৯ বিলিয়ন ডলারের ঋণ অনুমোদন করে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। 

আইএমএফের মতে, এই ধরনের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন উদ্যোগগুলো জাতীয় বাজেটের ওপর একটি ভারী বোঝা।

তৎকালীন প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপক্ষের সঙ্গে বিরোধের কারণে ২০০৮ সালে এমিরেটসের সঙ্গে ব্যবস্থাপনা চুক্তি বাতিল না হওয়া পর্যন্ত এয়ারলাইনসটি লাভজনক ছিল। 

মজার ব্যাপার হলো, এয়ারলাইনসটির সবচেয়ে লাভজনক বছরগুলোর মধ্যে একটি ছিল ২০০১ সাল, যখন বিচ্ছিন্নতাবাদী তামিল টাইগাররা হামলা চালিয়ে বেশ কয়েকটি বিমান ধ্বংস করেছিল। এতে বীমার টাকা ও অতিরিক্ত লোকবল কমানোর কারণে সংস্থাটির আয় বৃদ্ধি পায়।