আন্তর্জাতিক

ইকুয়েডরের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করল মেক্সিকো

ইকুয়েডরের রাজধানী কুইটোতে মেক্সিকান দূতাবাসে পুলিশি অভিযানের প্রতিবাদে ইকুয়েডরের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে মেক্সিকো। 

শনিবার (৬ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে সিনহুয়া নিউজ। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, কুইটোতে মেক্সিকান দূতাবাসে পুলিশের প্রবেশ ও ইকুয়েডরের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট হোর্হে গ্লাসকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় মেক্সিকো ইকুয়েডরের সঙ্গে তার কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছে। হোর্হে গ্লাস গত ডিসেম্বর থেকে মেক্সিকান দূতাবাসের আশ্রয়ে ছিলেন।

মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেস ম্যানুয়েল লোপেজ ওব্রাডর স্থানীয় সময় শুক্রবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্ট করে ইকুয়েডরের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি ইকুয়েডরের পদক্ষেপকে ‘আন্তর্জাতিক আইন এবং মেক্সিকোর সার্বভৌমত্বের স্পষ্ট লঙ্ঘন’ বলে অভিহিত করেছেন।

মেক্সিকোর প্রেসিডেন্টের পোস্টের ১০ মিনিটেরও কম সময় আগে, ইকুয়েডরের প্রেসিডেন্টের এক্স-এ এক পোস্টে নিশ্চিত করেন, গ্লাসকে স্থানীয় সময় শুক্রবার রাত ১১টা ২২ মিনিটে পুলিশ আটক করেছে। ইকুয়েডরের প্রেসিডেন্ট তার বিবৃতিতে বলেন, ‘ইকুয়েডর একটি সার্বভৌম দেশ এবং আমরা কোনো অপরাধীকে ছাড় দেব না।’

মেক্সিকোর পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যালিসিয়া বার্সেনা রাত ১১টা ২৩ মিনিটে এক্স-এ একটি পোস্টে জানান, ইকুয়েডরে মেক্সিকোর কূটনৈতিক কর্মীরা অবিলম্বে দেশটি ছেড়ে চলে যাবে। তিনি আরও জানান, আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের জন্য ইকুয়েডরের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে যাবে মেক্সিকো।

সিনহুয়া নিউজের খবরে বলা হয়েছে, শুক্রবার স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ১০টার দিকে সাঁজোয়া গাড়িতে চড়ে ইকুয়েডর পুলিশ জোরপূর্বক কুইটোতে মেক্সিকান দূতাবাসে প্রবেশ করে এবং গ্লাসকে আটক করে। এর একদিন আগে বৃহস্পতিবার, মেক্সিকান সরকার গ্লাসকে রাজনৈতিক আশ্রয় দিয়েছিল এবং তিনি মেক্সিকোতে যাওয়ার নিরাপদ পথের অপেক্ষায় ছিলেন।

এর কয়েক ঘণ্টা আগে, ইকুয়েডর সরকার সতর্ক জানিয়েছিল, তারা গ্লাসকে রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়ে দেশ ছেড়ে যাওয়ার অনুমতি দেবে না। স্থানীয় গণমাধ্যম জানায়, মেক্সিকান দূতাবাসের চারপাশে শুক্রবার বিকেল থেকে পুলিশ মোতায়েন শুরু হয়। মেক্সিকোর রাষ্ট্রদূত রবার্তো ক্যানসেকো পুলিশি অভিযানের সময় দূতাবাসের ভেতরে ছিলেন।

ইকুয়েডরে দুর্নীতির দায়ে দেশটির সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট গ্লাসকে দুটি মামলায় মোট ১৪ বছরের সাজা দেওয়া হয়েছে। তিনি পাঁচ বছর কারাগারে ছিলেন এবং ২০২২ সালে ছাড়া পেয়েছিলেন। ২০২৩ সালে তার বিরুদ্ধে ফের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর তিনি মেক্সিকান দূতাবাসে আশ্রয় নিয়েছিলেন।

গত ১ মার্চ, ইকুয়েডর সরকার গ্লাসকে গ্রেপ্তার করার জন্য নিরাপত্তা বাহিনীকে মেক্সিকান দূতাবাসে প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার অনুরোধ করেছিল, কিন্তু মেক্সিকো তা প্রত্যাখ্যান করে।