আন্তর্জাতিক

জরুরি প্রয়োজন ছাড়া দুবাই বিমানবন্দরে আসতে নিষেধ করলো কর্তৃপক্ষ

রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টির কারণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে উপসাগরীয় অঞ্চলের বেশ কয়েকটি দেশ। মধ্যপ্রাচ্যের অর্থনৈতিক প্রাণকেন্দ্র দুবাইসহ সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন ও ওমানে দেখা দিয়েছে বিরল বন্যা। এর মধ্যে বিশ্বের দ্বিতীয়-ব্যস্ততম বিমানবন্দর হিসেবে পরিচিত দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, বন্যার কারণে দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বেশ কয়েকটি ‘অপারেশনাল চ্যালেঞ্জের’ মুখে পড়েছে। তাই একান্ত প্রয়োজন ছাড়া কাউকে বিমানবন্দরে আসতে মানা করেছে কর্তৃপক্ষ।

গত সোমবার ভোররাত থেকে উপসাগরীয় অঞ্চলের বেশ কয়েকটি দেশে ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হয়। সংযুক্ত আরব আমিরাতের সরকারি তথ্য অনুযায়ী, এবার ৭৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে। মঙ্গলবার দিনের শেষভাগ পর্যন্ত দুবাইয়ে ১৪২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া বিমানবন্দরের ভিডিওতে জলাবদ্ধ রাস্তায় উড়োজাহাজ অবতরণ করতে দেখা যায়। মঙ্গলবার রাতে বিমানবন্দরে কার্যক্রম বন্ধ করে রাখা হয়। বিমানবন্দরের পার্কিং লটে গাড়িগুলোকে অর্ধেক ডুবে থাকতে দেখা গেছে। চারপাশের রাস্তায় বন্যার পানি জমে যাওয়ায় যাত্রীদের টার্মিনালে পৌঁছাতে বেশ বেগ পেতে হয়।  

দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, তারা ‘খুবই চ্যালেঞ্জিং অবস্থার’ সম্মুখীন। এলাকাগুলো পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় একান্ত প্রয়োজন ছাড়া কাউকে বিমানবন্দরে আসতে মানা করেছে কর্তৃপক্ষ। 

ফ্লাইট অ্যাওয়ার ডেটার তথ্য বলছে, বুধবার দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ২৯০টি ফ্লাইট বাতিল করা হয়। এছাড়াও ৪৪০টি ফ্লাইট বিলম্বিত করা হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের আটলান্টা বিমানবন্দরের পরে বিশ্বের দ্বিতীয় ব্যস্ততম এই বিমানবন্দর গত বছর ৮০ মিলিয়ন বিমানযাত্রীকে সেবা দিয়েছে। দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ সতর্ক করে বলেছে, বিমানবন্দরের কার্যক্রম স্বাভাবিক করতে কিছুটা সময় লাগবে।

দুবাইয়ের সবচেয়ে বড় উড়োজাহাজ কোম্পানি এমিরেটাস জানিয়েছে, দুবাইয়ে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে তাদের সব ফ্লাইটের যাত্রীদের চেক-ইন বন্ধ রাখা হয়েছে।

উড়োজাহাজ কোম্পানিটি জানায়, এমিরেটাস কর্তৃপক্ষ ফ্লাইটের সময়সূচি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত যাত্রীদের সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।

দুবাইয়ের অনেক এলাকা পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় কিছু যাত্রীকে বিমানবন্দর থেকে না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

দুবাই মল এবং মল অব দ্য এমিরেটসের মতো ফ্ল্যাগশিপ শপিং সেন্টারসহ শহরের মূল অবকাঠামোগুলোও প্লাবিত হয়েছে। অনেক স্থানে রাস্তা ধসে পড়েছে, আবাসিক এলাকাও নিমজ্জিত হয়েছে এবং বিভিন্ন স্থানে বাড়ির ছাদ, দরজা এবং জানালা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

এদিকে, ওমানে গত সোমবার থেকে ভারী বর্ষণে এখন পর্যন্ত ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।