আন্তর্জাতিক

ইরানে হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে প্রেসিডেন্ট নিহতের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রকে দুষছে রাশিয়া

হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যুর ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করেছেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ। মঙ্গলবার (২১ মে) কাজাখস্তানে এক বাণিজ্য সম্মেলনে অংশ নিয়ে তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার কারণে ইরানের বিমান চলাচলের নিরাপত্তা আরও খারাপ হয়েছে। 

ইরানের বার্তা সংস্থা ইরনা এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, উত্তর-পশ্চিম ইরানে গত ১৯ মে’র হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার বিষয়ে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী এমন মন্তব্য করেছেন। ওই দুর্ঘটনায় ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির আব্দুল্লাহিয়ান, দুই সিনিয়র স্থানীয় কর্মকর্তার পাশাপাশি দুইজন গার্ড, দুই পাইলট এবং একজন ক্রু সদস্য নিহত হয়েছেন।

দুর্ঘটনায় দায় যুক্তরাষ্ট্রের ঘাড়ে চাপিয়ে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি উড়োজাহাজের যন্ত্রাংশ সরবরাহের ওপর নিষেধাজ্ঞা মানুষের জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে। তারা এটি অস্বীকার করলেও সত্য হলো, যেসব দেশের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তারা খুচরা যন্ত্রাংশ পায় না।’

তুর্কি বার্তা সংস্থা আনাদোলুর প্রতিবেদন বলছে, রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি বেল-২১২ মডেলের ছিল। যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি এ ধরনের হেলিকপ্টার গত শতকের সত্তরের দশকে কিনেছিন ইরান। কিন্তু  ১৯৭৯ সালে দেশটিতে ইসলামি বিপ্লবের পর তেহরানের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া নিষেধাজ্ঞার কারণে এসব মেরামতে যন্ত্রাংশ কেনাটা ইরানের জন্য কঠিন হয়ে পড়ে। যার ফলে প্রায়ই নিরাপত্তা পরীক্ষা ছাড়াই হেলিকপ্টারগুলো উড্ডয়ন করতো। 

গত সোমবার (২০ সে) যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ এনেছিলেন ইরানের সাবেক পররাষ্টমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভেদ জারিফ। অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে তিনি বলেছিলেন, ‘এই ট্র্যাজেডির পেছনে অন্যতম অপরাধী যুক্তরাষ্ট্র। কারণ তাদের নিষেধাজ্ঞার কারণে ইরান প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ কিনতে পারেনি। যুক্তরাষ্ট্র ইরানের জনগণকে ভালো বিমান চলাচলের সুবিধা উপভোগ করতে দেয় না।’ 

অন্যদিকে এই অভিযোগ ‘ভিত্তিহীন’ বলে দাবি করেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের মুখপাত্র জন কিরবি। সোমবার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকরা এ অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে কিবরি বলেন, ‘ইরানের সরকারি সূত্রগুলো দুর্ঘটনা কারণ হিসাবে খারাপ আবহাওয়ার কথা উল্লেখ করেছে, বিশেষ করে কুয়াশা।’ 

তার ভাষ্য, ‘হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের ঘটনার সঙ্গে তেহরানের উপর ওয়াশিংটনের নিষেধাজ্ঞার ভূমিকার অভিযোগ ভিত্তিহীন অভিযোগ, এর কোনো সত্যতা নেই। এটা আশ্চর্যজনক নয়, দুঃখজনক। প্রতিটি দেশ, সেটা যেই হোক না কেন, তাদের সরঞ্জামগুলোর সুরক্ষা ও নির্ভরযোগ্যতা নিশ্চিত করা তাদের নিজস্ব দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। ’

হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের ঘটনা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে ইরান সরকার।