পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখওয়া প্রদেশে বোমা হামলায় সেনাবাহিনীর এক ক্যাপ্টেনসহ অন্তত সাত নিরাপত্তা কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন।
রোববার প্রদেশটির লাক্কি মারওয়াত জেলায় নিরাপত্তা সদস্যদের বহনকারী যান লক্ষ্য করে একটি আইইডির বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।
স্থানীয় কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, যানটি কাইচি কামার এলাকার দিকে যাওয়ার পথে সুলতানখেল গ্রামের কাছে হামলার মুখে পড়ে। এলাকাটি পাঞ্জাব প্রদেশের মিনাওয়ালি জেলার সীমান্তবর্তী।
পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ (আইএসপিআর) এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘লাক্কি মারওয়াত জেলায় নিরাপত্তা বাহিনীর গাড়িতে একটি ঘরে তৈরি বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে।’
পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর গণমাধ্যম শাখাটি জানিয়েছে, নিহত ক্যাপ্টেনের নাম মুহাম্মদ ফারাজ ইলিয়াস (২৬)। নিহত অন্যান্যদের মধ্যে একজন সুবেদার মেজর, দুইজন ল্যান্স নায়েক ও তিনজন সিপাহী রয়েছেন।
এ হামলার পর নিরাপত্তা বাহিনী ওই এলাকায় অভিযান চালাচ্ছে বলে জানিয়েছে তারা।
লাক্কি মারওয়াতে সাহাব খেল এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর হওয়া এ হামলার তীব্র নিন্দা করেছেন খাইবার পাখতুনখওয়ার গভর্নর ফয়সাল করিম কুন্ডি ও মুখ্যমন্ত্রী আলি আমিন খান।
অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের খবরে বলা হয়েছে, কোনো গোষ্ঠী এখন পর্যন্ত হামলার দায় স্বীকার করেনি। তবে সন্দেহ হতে পারে পাকিস্তানি তালেবানদের উপর, যাদের এই অঞ্চলে শক্তিশালী উপস্থিতি রয়েছে। পাকিস্তানি তালেবান ‘তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান’ বা টিটিপি নামে পরিচিত। ২০২১ সালে আফগানিস্তানে তালেবান সরকার ক্ষমতা দখল করার পর থেকে পাকিস্তানে টিপিপির তৎপরতা বেড়েছে।
এদিকে একই প্রদেশের বাজাউর জেলায় রোববার ভোররাতে আরেকটি হামলার ঘটনা ঘটেছে। বিদ্রোহীরা পুলিশের একটি চেকপোস্টে চোরাগোপ্তা হামলা চালিয়েছে। তবে হামলাটি প্রতিহত করা হয়েছে বলে পাকিস্তানি গণমাধ্যম ডন জানিয়েছে।
রোববার পেশোয়ারে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম বিভাগ (সিটিডি) এক প্রতিবেদনে বলেছে, গত পাঁচ মাসে প্রদেশে সন্ত্রাসীদের ২৩৭টি হামলার ঘটনায় ৬৫ জন পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন এবং আরও ৮৬ জন আহত হয়েছেন।
এতে বলা হয়েছে, পুলিশের ধারাবাহিক অভিযানে ১১৭ জঙ্গি নিহত এবং ২৯৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পাকিস্তান সরকার দীর্ঘদিন থেকে অভিযোগ করে আসছে, আফগানিস্তানের তালেবান শাসকরা সীমান্তের ওপারে টিটিপি যোদ্ধাদের আশ্রয় দিচ্ছে। তবে আফগানিস্তানের তালেবান সরকার জোর দিয়ে বলেছে, তারা কাউকে কোনো দেশে সহিংসতার জন্য আফগান মাটি ব্যবহার করতে দেয় না।
এদিকে টিটিপি বলছে, তারা পাকিস্তানে সেনাদের লক্ষ্যবস্তু করার জন্য আফগান মাটি ব্যবহার করছে না।