আন্তর্জাতিক

লেবানন-ইসরায়েল সংঘাত কি অনিবার্য?

সম্প্রতি লেবাননের হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলের মধ্যে গুলি বিনিময়ের ঘটনা বেড়েছে। চলতি সপ্তাহে ইসরায়েলের উত্তর সীমান্তে শতাধিক রকেট নিক্ষেপ করেছে ইসরায়েল। এ ঘটনায় আশঙ্কা দেখা দিয়েছে লেবাননে পূর্ণমাত্রায় হামলা চালাতে পারে ইসরায়েল। তবে এই আশঙ্কা কতটুকু বাস্তবে রূপ নিতে পারে তা বিশ্লেষণ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদিও উভয় পক্ষ সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরু করার সিদ্ধান্ত নাও নিতে পারে, তাদের অতিরিক্ত পদক্ষেপ এখনও অসাবধানতাবশত সর্বাত্মক যুদ্ধের দিকে মোড় নিতে পারে।

ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের সদস্য উইমেন জানান, ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর যুদ্ধ শুরু করার বিষয়ে সচেতন সিদ্ধান্ত নেওয়ার সম্ভাবনা কম। সংঘাত যত বেশি তীব্র হবে, প্রতিটি পক্ষ অপরের ভূখণ্ডে যত গভীরভাবে আঘাত হানবে এবং যত ভারী অস্ত্র ব্যবহার করবে, কিছু ভুল হওয়ার সম্ভাবনা তত বেশি হবে।

লেবাননের হামলার কারণে ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে বহু মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে জোট সরকারে তীব্র চাপের মুখে রয়েছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী আইডিএফ জানিয়েছে, উত্তরে ৫৩ হাজারেরও বেশি ইসরায়েলি তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। লেবানন থেকে রকেট হামলার পর উত্তর ইসরায়েলের গ্যালিলি অঞ্চলে চলতি সপ্তাহে আরও বাড়ি খালি করা হয়েছে।

অপরদিকে, সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে লেবাননে ইসরায়েলের সীমান্তের কাছাকাছি অঞ্চল এবং শহর থেকে ৯৪ হাজারেরও বেশি লোক বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

সরায়েলের উগ্র ডানপন্থী জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেন গভির এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘হিজবুল্লাহর সব ঘাঁটি পুড়িয়ে ফেলতে হবে এবং ধ্বংস করতে হবে। যুদ্ধ!’

বিরোধী নেতা ইয়ার ল্যাপিডও সরকারের নিন্দা করে বলেছেন, ‘উত্তর অগ্নিতে জ্বলছে এবং ইসরায়েলি প্রতিরোধ এর সাথে জ্বলছে। গাজার পরে সরকারের কোনো পরিকল্পনা নেই, উত্তরাঞ্চলের বাসিন্দাদের ফেরানোর কোনো পরিকল্পনা নেই, কোনো ব্যবস্থাপনা নেই, কোনো কৌশল নেই। সম্পূর্ণ বাতিল সরকার।’

ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ মিত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এ ব্যাপারে বারবার সতর্ক করেছে। তাদের উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। 

পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বুধবার বলেছেন, ‘সংঘাতকে নিয়ন্ত্রণের বাইরে বাড়তে না দিতে’ আলোচনা চলছে।

ট্রুম্যান ইনস্টিটিউটের বিশেষজ্ঞ শেকড বলেন, গাজার সমর্থনে হিজবুল্লাহ হামলা চালাচ্ছে। এই গোষ্ঠীর কৌশল সম্ভবত তার ঘনিষ্ঠ মিত্র ইরানের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সমন্বয় করা।