আন্তর্জাতিক

ইসরায়েলের গুরুত্বপূর্ণ সামরিক স্থাপনার ভিডিও ধারণ করলো হিজবুল্লাহ

লেবাননের ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হিজবুল্লাহ গোয়েন্দা ড্রোন থেকে তোলা উত্তর ইসরায়েলের বিভিন্ন কৌশলগত স্থাপনার ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করেছে। এসব স্থাপনার মধ্যে রয়েছে হাইফা শহরে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর সমুদ্র ও বিমান ঘাঁটি।

পার্স টুডের খবরে বলা হয়েছে, ইসরায়েল সরকার নিজের ভূখণ্ড ও আকাশসীমাকে ‘কঠোরভাবে সুরক্ষিত’ বলে যে দাবি করে তার প্রতি মারাত্মক চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে এই ভিডিও।

মঙ্গলবার সাড়ে নয় মিনিটের ভিডিও ফুটেজটি নিজের টেলিগ্রাম চ্যানেলে প্রকাশ করেছে হিজবুল্লাহ। ভিডিওটির শিরোনাম দেয়া হয়েছে, ‘হুদহুদ যা বহন করে এনেছে।’ দৃশ্যত হুদহুদ নামক গোয়েন্দা ড্রোন ব্যবহার করে ইসরায়েলি স্থাপনাগুলোর ভিডিও দৃশ্য ধারণ করেছে হিজবুল্লাহ।

টাইমস অব ইসরায়েলের খবরে বলা হয়েছে, হিজবুল্লাহের প্রকাশ করা প্রায় ১০ মিনিটের ভিডিও ফুটেজ কবে ধারণ করা হয়েছিল, সে সম্পর্কে কোনো তথ্য প্রকাশ করেনি গোষ্ঠীটি। প্রকাশিত ভিডিওটির বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করেনি ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)।

গত বছরের নভেম্বরে হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরাল্লাহ দাবি করেছিলেন যে, তারা ইসরায়েলের হাইফা বন্দরে নজরদারি ড্রোন পাঠাচ্ছে।  সাম্প্রতিক মাসগুলোতে লেবাননের এই সশস্ত্র গোষ্ঠীটি উত্তর ইসরায়েলে বিস্ফোরক-বোঝাইসহ ড্রোন অভিযান বাড়িয়েছে।

ভিডিওতে ইসরায়েলের লেবানন সীমান্ত থেকে প্রায় ২৭ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত হাইফা উপকূলে ইসরায়েলি নৌবাহিনীর একটি ঘাঁটির দৃশ্য দেখানো হয়েছে। সেই সঙ্গে নৌবাহিনীর সাবমেরিন ইউনিট শায়েতেত ৭-এর অন্তর্ভুক্ত বেশ কয়েকটি যুদ্ধজাহাজ ও সামরিক অবকাঠামোর দৃশ্যও দেখানো হয়েছে। 

হাইফা বন্দর ছাড়াও, ফুটেজে উত্তর ইসরায়েল জুড়ে কৌশলগত সামরিক অবস্থান দেখানো হয়। যার মধ্যে রয়েছে আয়রন ডোম ও ডেভিডস স্লিং এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম। সেইসঙ্গে কাছাকাছি কিরিয়াত ইয়ামের একটি আবাসিক এলাকার ফুটেজ।

হিজবুল্লাহ দাবি করেছে, ড্রোনটি বিনা বাধায় লেবাননে ফিরে এসেছে।

এদিকে ফুটেজ প্রকাশিত হওয়ার পরপরই ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, মঙ্গলবার (১৮ জুন) পশ্চিম গ্যালিলিতে তিনটি সন্দেহভাজন ড্রোন গুলি করে ‍ভূপাতিত করেছে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী।

আইডিএফ মঙ্গলবার আরও বলেছে, তারা দক্ষিণ লেবাননে ধারাবাহিক হামলা চালিয়েছে। ড্রোন হামলার সাথে জড়িত বেশ কয়েকটি হিজবুল্লাহ অপারেটিভকে লক্ষ্য করে পাল্টা হামলা চালানো হয়েছে।

অপারেটিভরা হিজবুল্লাহর বিমান বাহিনীর ইউনিটের অংশ ছিল বলে জানিয়েছে আইডিএফ। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর দাবি, হামলার শিকার অপারেটিভরা উত্তর ইসরায়েলে কয়েক ডজন বিস্ফোরক-বোঝাই ড্রোন হামলা ও অন্যান্য নজরদারি অভিযানের পিছনে ছিল।

এদিকে, ইসরায়েলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ইসরায়েল পূর্ণমাত্রায় আক্রমণ শুরু করলে হিজবুল্লাহ ধ্বংস হয়ে যাবে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে ইসরায়েলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ‘হিজবুল্লাহ এবং লেবাননের বিরুদ্ধে আমরা খেলার নিয়ম পরিবর্তনের মুহূর্তের খুব কাছাকাছি যাচ্ছি। সর্বাত্মক যুদ্ধে হিজবুল্লাহকে ধ্বংস করা হবে আর লেবানন মারাত্মক আঘাত পাবে।’