আন্তর্জাতিক

লেবাননে শত শত ওয়াকিটকিতে বিস্ফোরণে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২০

লেবাননে পেজার বিস্ফোরণে ১২ জনের মৃত্যুর ঘটনার এক দিন পার না হতেই এবার দেশজুড়ে ওয়াকিটকি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় প্রথমে ১৪ জন নিহত হওয়ার কথা বলা হলেও পড়ে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে অন্তত ২০ জনে। খবর বিবিসির।

লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) ওয়াকিটকি বিস্ফোরণের ঘটনায় চার শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। এর আগে পেজার বিস্ফোরণে আহত হয় প্রায় তিন হাজার মানুষ এবং নিহত হয় শিশুসহ ১২ জন।

এসব ঘটনায় দেশটিতে ইলেকট্রিক ডিভাইস নিয়ে সাধারণ মানুষের মনে ভীতি তৈরি হয়েছে। বুধবার লেবাননের বিভিন্ন স্থানে ওয়াকিটকির পাশাপাশি মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, এমনকি সৌরবিদ্যুতের প্যানেলও বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। বিভিন্ন স্থান থেকে দফায় দফায় বিস্ফোরণের খবর পাওয়া যায়।

এর এক দিন আগে মঙ্গলবার লেবাননজুড়ে হিজবুল্লাহ যোদ্ধাদের যোগাযোগের জন্য ব্যবহার করা পেজার বিস্ফোরণ ঘটে।

বিশ্লেষকদের ধারণা, হিজবুল্লাহর পেজারগুলোতে বিস্ফোরণ ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের পরিকল্পনার ফল। হিজবুল্লাহর কেনা পাঁচ হাজার পেজারের ভেতরে বিস্ফোরক রেখে দিয়েছিল মোসাদ, লেবাননের একটি নিরাপত্তা সূত্র এবং অন্য একটি সূত্রের বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এমন খবর জানিয়েছে। যদিও এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি ইসরায়েল।

এরপর গতকাল বুধবার লেবাননে হিজবুল্লাহর ব্যবহার করা ওয়াকিটকিসহ আরও কিছু ডিভাইসে বিস্ফোরণ ঘটে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বিস্ফোরণের ঘটনায় এসব যন্ত্র সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের একটা যোগসাজশ আছে। যন্ত্রগুলোতে ১ থেকে ৩ গ্রাম শক্তিশালী বিস্ফোরক ভরা হয়ে থাকতে পারে; যেমনটা ঘটেছে পেজারের ক্ষেত্রে। 

গত দুদিনের বিস্ফোরণের ঘটনার জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করেছে হিজবুল্লাহ ও লেবানন সরকার। কিন্তু এখন পর্যন্ত এ নিয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করেনি ইসরায়েল। কিন্তু গতকাল বিস্ফোরণের ঘটনার পর নিজেদের সেনাদের প্রশংসা করে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট বলেন, ‘আমরা যুদ্ধের একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা পর্বে রয়েছি। এখন আমাদের সাহস, সংকল্প ও উদ্যম দরকার।’

নিজেদের সেনাদের উদ্দেশে দেওয়া ওই বক্তৃতায় গ্যালান্ট ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর প্রশংসা করে বলেন, ‘(আপনাদের কাজের) ফলাফল বেশ চমৎকার।’

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের চলমান আগ্রাসনকে কেন্দ্র করে কয়েক মাস ধরেই দেশটির সঙ্গে সীমিত পর্যায়ে হিজবুল্লাহর সংঘাত চলছে। এর মধ্যেই দুই দফায় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটল। এর প্রতিক্রিয়ায় হিজবুল্লাহ ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এতে করে দুপক্ষের মধ্যে সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরুর আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।