আন্তর্জাতিক

২০ বছরের মধ্যে লেবাননে সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা ইসরায়েলের, নিহত ৪৯২

লেবাননে বড় ধরনের হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল। সোমবার হিজবুল্লাহর প্রায় ১ হাজার ১০০টি অবস্থান লক্ষ্য করে চালানো হামলায় কমপক্ষে ৩৫ শিশুসহ ৪৯২ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও ১ হাজার ৬৪৫ জন।  

দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, প্রায় ২০ বছরের মধ্যে লেবাননে ইসরায়েলি হামলায় এটিই সবচেয়ে প্রাণঘাতী দিন। এর আগে ২০০৬ সালে লেবানন-ইসরায়েল যুদ্ধে প্রায় ২৫০ হিজবুল্লাহ সদস্যসহ ১১০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হন। অপরদিকে হিজবুল্লাহর রকেট হামলায় ইসরায়েলের ১২১ সৈন্য ও ৪৩ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হন।

গত বছরের ৮ অক্টোবর, ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েল যুদ্ধ শুরু করলে ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ। এরপর থেকে লেবাননের সঙ্গে ইসরায়েলের উত্তর সীমান্তে প্রায় প্রতিদিনই ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ও হিজবুল্লাহর মধ্যে গুলি বিনিময় হয়েছে।

তবে গত কয়েকদিন ধরে হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলি বাহিনীর মধ্যে ব্যাপকভাবে পাল্টাপাল্টি হামলা চলছিল। সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) ভোর থেকে আকাশপথে ব্যাপক হামলা শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। জবাবে ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে ৩০টির মতো রকেট ছুড়েছে হিজবুল্লাহর যোদ্ধারা।

লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সোমবার দিনভর দক্ষিণ লেবাননের বেকা ও বালবেক অঞ্চলের গ্রাম ও শহরগুলোর পাশাপাশি রাজধানী বৈরুতেও ব্যাপকভাবে বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে এখন পর্যন্ত ৪৯২ জন নিহত হয়েছেন। নিহত ও আহতদের মধ্যে নারী, শিশু ও চিকিৎসাকর্মী রয়েছেন। হতাহতদের মধ্যে কতজন বেসামরিক নাগরিক বা হিজবুল্লাহ যোদ্ধা তা স্পষ্ট নয়। তবে ইসরায়েল যেসব স্থানকে হিজবুল্লাহর লক্ষ্যবস্তু হিসেবে বর্ণনা করেছে তার বেশিরভাগই আবাসিক এলাকা ও গ্রাম।

হিজবুল্লাহ সক্রিয় রয়েছে, এমন এলাকা থেকে লেবাননের বাসিন্দাদের সরে যেতে বলেছে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী। অব্যাহত হামলার মুখে দক্ষিণ লেবানন থেকে লোকজনকে সরে যেতে দেখা গেছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চলমান সংঘাতে লেবাননের বেসামরিক নাগরিকরা গণহারে বাস্তুচ্যুত হচ্ছেন, যা ২০০৬ সালের যুদ্ধকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, ২০০৬ সালের যুদ্ধের চেয়েও ভয়াবহ সহিংসতার দ্বারপ্রান্তে রয়েছে এ অঞ্চল।