আন্তর্জাতিক

ভারত সরকার অপরাধমূলক কাজে বিষ্ণোই গ্যাংকে ব্যবহার করছে: কানাডা পুুলিশ

ভারতের মহারাষ্ট্রের সাবেক প্রতিমন্ত্রী বাবা সিদ্দিককে হত্যার ঘটনায় সংশ্লিষ্টতা নিয়ে আলোচনায় রয়েছে বিষ্ণোই গ্যাং। এবার সেই বিষ্ণোই গ্যাং নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন কানাডার পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারা। তাদের দাবি, ভারতের গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিষ্ণোই গ্যাংয়ের অপরাধীদের যোগাযোগ রয়েছে। 

মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় সোমবার রয়্যাল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশের (আরসিএমপি) কমিশনার মাইক ডুহিন এ অভিযোগ তুলেছেন। একই দাবি করেছেন তার সহযোগী ব্রিজিত গোভান।

কানাডায় খালিস্তানপন্থি নেতা হরদীপ নিজ্জর হত্যাখাণ্ডে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার হাত রয়েছে বলে আগেই দাবি করেছে কানাডা। ভারতীয় এজেন্টরা কানাডায় রক্তপাত, নাশকতা ঘটাচ্ছেন বলে প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো নিজেই অভিযোগ তুলেছেন। গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রুডো বলেন, ‘ভারত সরকার এই ভেবে মৌলিক ভুল করেছে যে তারা কানাডার মাটিতে কানাডিয়ানদের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডকে সমর্থন করতে পারে। সেটা খুন হোক বা জোর করে কিছু আদায় হোক। এটা একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়।’ 

এর মধ্যেই ভারত সরকারের বিরুদ্ধে নতুন অভিযোগ আনলো কানাডা পুলিশ। 

সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে রয়‍্যাল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশ কমিশনারের সহযোগী ব্রিজিত গোভান বলেন, ‘ভারত সরকার দক্ষিণ এশিয়ার কিছু গোষ্ঠীকে টার্গেট করছে। বিশেষ করে কানাডায় খালিস্তানপন্থিদের টার্গেট করা হচ্ছে। আমরা যতটুকু তথ্য প্রমাণ পেয়েছি, তাতে মনে হয়েছে, তারা এই কাজে সংগঠিত অপরাধীদের ব্যবহার করছে। বিশেষ করে বিষ্ণোই গ্যাংকে ব্যবহার করছে তারা। আমরা বিশ্বাস করি, এই গোষ্ঠীটি (বিষ্ণোই গ্যাং) ভারত সরকারের এজেন্টদের সঙ্গে যুক্ত।’

ব্রিজিত গোভানের বক্তব্য উল্লেখ করে পুলিশ কমিশনার মাইক ডুহিনের কাছে সাংবাদিকেরা জানতে চান, ভারত সরকারের এজেন্টদের ‘হত্যা, চাঁদাবাজি, ভয় দেখানো এবং জবরদস্তির’ অভিযোগে অভিযুক্ত করা হচ্ছে কী? জবাবে তিনি স্পষ্টভাবে ‘হ্যাঁ’ বলেন।

এর আগে গত রোববার কানাডায় খালিস্তানপন্থি শিখ নেতা হরদীপ সিং নিজ্জর হত্যা মামলায় ভারতীয় হাইকমিশনার সঞ্জয় কুমার ভার্মাকে ‘স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি’ বলে উল্লেখ করে কানাডার মাউনটেড পুলিশ। এতে চরম প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে ভারত সরকার কানাডার ৬ কূটনীতিককে গতকাল বহিষ্কার করেছে। একই দিন ভারত সরকার কানাডা থেকে তার হাইকমিশনার ও অন্যান্য কূটনীতিক ও কর্মকর্তাদেরও প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে। তবে কানাডা বলছে, তারা ভারতীয় হাইকমিশনারসহ আরও কয়েকজন কূটনীতিক কর্মকর্তাকে বহিষ্কার করেছেন।

নিজ্জর হত্যাকাণ্ডে ভারত সরকারের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ শুরু থেকেই অস্বীকার করে আসছে দিল্লি। কানাডার মাটিতে নাশকতামূলক কাজকর্মে ভারত সরকারের সমর্থন রয়েছে বলে ট্রুডো যে দাবি করেছেন, তা-ও অস্বীকার করেছে দিল্লি। দিল্লির দাবি, এর সপক্ষে কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেনি কানাডা সরকার। যদিও ট্রুডো সরকারের দাবি, সব প্রমাণপত্রই তুলে ধরা হয়েছে। কিন্তু তার সাপেক্ষে কোনও পদক্ষেপ করেনি দিল্লি। পাল্টাপাল্টি অভিযোগে ভারত এবং কানাডার কূটনৈতিক সম্পর্ক খুব তিক্ত হয়ে উঠেছে।