আন্তর্জাতিক

ট্রুডোকে পদত্যাগের আল্টিমেটাম দিলেন দলের এমপিরা

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোকে ২৮ অক্টোবরের মধ্যে পদত্যাগের জন্য আল্টিমেটাম দিয়েছেন তার দল লিবারেল পার্টি অব কানাডার এমপিরা।

বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) দ্য গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় বুধবার কানাডার পার্লামেন্টে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন ট্রুডোর দলের এমপিরা। সেখানে তারা ট্রুডোর কর্মকাণ্ডে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এই বৈঠকে ট্রুডোর পদত্যাগের বিষয়ে একটি রূপরেখা দেওয়া হয়। তবে এ সময়ের মধ্যে ট্রুডো পদত্যাগ না করলে কী পরিণতি হবে তা উল্লেখ করা হয়নি। 

বৈঠকে ট্রুডো বা তার নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভার কোনো সদস্য সেখানে ছিলেন না। বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, অন্তত ২০ জন এমপি ট্রুডোকে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়ে বক্তব্য দিয়েছেন। অনেক আইনপ্রণেতা অবশ্য এই দাবির বিরোধিতা করেও বক্তব্য দিয়েছেন। বৈঠকে মোট ১৫৩ জন এমপি উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে, লিবারেল পার্টির দুই ডজন এমপি ট্রুডোর পদত্যাগ দাবি করে চিঠি লিখেন। সেখানে তারা আল্টিমেটাম দেন, আগামী ২৮ অক্টোবরের মধ্যে ট্রুডোকে পদত্যাগ করতে হবে। কিন্তু তাদের চিঠি ট্রুডোর ওপর খুব একটা প্রভাব ফেলতে পেরেছে বলে মনে হয় না।

গত ৯ বছর ধরে কানাডার প্রধানমন্ত্রীর পদে রয়েছেন জাস্টিন ট্রুডো। তবে সাম্প্রতিক বিভিন্ন জরিপ বলছে, দেশের অভ্যন্তরে জনপ্রিয়তা ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে তার। আবার একই সময়ে বাড়ছে লিবারেল পার্টির প্রতিপক্ষ কনজারভেটিভ পার্টির জনপ্রিয়তা। জরিপ বলছে, জনপ্রিয়তার নিরিখে সম্প্রতি লিবারেল পার্টির থেকে ২০ পয়েন্ট এগিয়ে গেছে কনজারভেটিভ পার্টি।

আগামী ২০২৫ সালে পার্লামেন্ট নির্বাচন হবে কানাডায়। দলের শীর্ষ নেতা হিসেবে সেই নির্বাচনে লিবারেল পার্টিকে নেতৃত্ব দেওয়ার কথা ট্রুডোর। কিন্তু ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তায় ধস নামায় সামনের নির্বাচনে তার নেতৃত্বের ওপর ভরসা রাখতে পারছেন না দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা।

কানাডার রাজনীতি বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, কানাডাপ্রবাসী শিখ নেতা হরদীপ সিং নিজ্জার হত্যাকাণ্ডকে ঘিরে ভারতের সঙ্গে কানাডার কূটনৈতিক টানাপোড়েন ও তিক্ততা ট্রুডোর জনপ্রিয়তা হ্রাসের জন্য অনেকাংশে দায়ী।

শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা হরদীপ সিং নিজ্জর হত্যাকাণ্ড ইস্যুতে কানাডা ও ভারতের মধ্যে সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। দুই দেশের মধ্যে চলমান এই সংকটের শেষটা ঠিক কোথায় গিয়ে পৌঁছায় তা অনুমান করা সহজ নয়। এতে জাস্টিন ট্রুডো যদি আবারও নির্বাচনে জেতেন, তাহলে ভারত সম্পর্কে তার অবস্থান পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা কম বলেই মনে করা হচ্ছে।