আন্তর্জাতিক

জাপানে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাল ক্ষমতাসীন দল

জাপানের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের ভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাল ক্ষমতাসীন দল লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি এলডিপি। এককভাবে গতবারের চেয়ে অনেক কম আসনে জয়ী হয়েছে দলটি। এমনকি জোট হিসেবেও সংখ্যাগরিষ্ঠতা ধরে রাখতে পারেনি এলডিপি। যা এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ ফলাফল। 

সোমবার (২৮) অক্টোবর এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০০৯ সালের পর এই প্রথম এলডিপি তার সংসদীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছে। ১৯৫৫ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে দলটি প্রায় একটানা দেশ শাসন করেছে।

জাপান গতকাল (রোববার) ৫০তম প্রতিনিধি পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। আজ (সোমবার) প্রকাশিত নির্বাচন ফলাফল অনুযায়ী, ক্ষমতাসীন এলডিপি ও কোমেই জোট পেয়েছে ২১৫টি আসন। পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে প্রয়োজন ২৩৩ আসন।

এমন ফলাফলের জন্য সামনে দেশটির প্রধানমন্ত্রী ও লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রধান ইশিবা শিগেরু সমালোচনার মুখে পড়তে পারেন এবং তাদের জোট অব্যাহতভাবে ক্ষমতা ধরে রাখতে পারবেন কিনা তা মূল বিষয় হবে।

জাপানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের তথ্য বলছে, দেশটির পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে মোট আসন ৪৬৫টি। সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে প্রয়োজন ২৩৩ আসন। গতবার এলডিপি একাই পেয়েছিল ২৪৭ আসন। তবে, এবার জোট হয়েও নির্দিষ্ট আসন পাচ্ছে না এলডিপি ও কোমেই। অন্যদিকে, বিরোধী দলগুলোর সম্মিলিত আসনসংখ্যা গতবারের চেয়ে অনেক বেশি। সবচেয়ে ভালো অবস্থানে প্রধান বিরোধী দল কনস্টিটিউশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি অব জাপান (সিডিপিজে)। দলটি এবার ১৪৮টি আসনে জিতেছে। গতবার ৯৮টি আসনে জিতেছিল। 

গত মাসে ক্ষমতাসীন এলডিপির প্রধান নির্বাচিত হন ইশিবা শিগেরু। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার তিনদিনের মাথায় পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ ভেঙে দিয়ে নির্ধারিত সময়ের আগে নির্বাচনের ঘোষণা দেন তিনি।

বিভিন্ন গণমাধ্যম বলছে, দলীয় প্রধান হওয়ার পর এলডিপির আর্থিক কেলেঙ্কারি সামাল দিতে পদক্ষেপ নেন ইশিবা। যা ভোটারদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ভোটারদের অভিযোগ, ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী অনেক নেতাকে নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন ইশিবা। ফলে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি নাগরিকদের সমর্থনের হার দ্রুত হ্রাস পায়। 

সোমবার একটি বক্তৃতায় ইশিবা বলেন, এলডিপি ‘কঠোর রায়’ পেয়েছে। তিনি আরো জানান, তার দল জনগণের এই রায় ‘নম্রভাবে’ মেনে নেবে।

জাতীয় সম্প্রচারকারী এনএইচকে-কে ইশিবা বলেন, ‘ভোটাররা আমাদের একটি কঠোর রায় দিয়েছেন এবং আমাদের এই ফলাফলকে বিনীতভাবে মেনে নিতে হবে।’

নির্বাচনের আগে জাপানি সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছিল, যদি এলডিপি সংসদীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারায়, তাহলে ইশিবাকে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব ছাড়তে হতে পারে, যা তাকে জাপানের ইতিহাসে সবচেয়ে কম সময়ের জন্য প্রধানমন্ত্রী করে তুলবে।