আন্তর্জাতিক

বিশ্বের ‘সবচেয়ে শক্তিশালী’ ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালালো উ. কোরিয়া

বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ও দূরপাল্লার আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম) উৎক্ষেপণের দাবি করেছে উত্তর কোরিয়া। বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) দেশটি তার পূর্ব উপকূলের সমুদ্রের দিকে এই ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা চালানোর দাবি করেছে।

দক্ষিণ কোরিয়া মনে করছে, উত্তর কোরিয়া ইউক্রেন যুদ্ধে সহায়তা করার জন্য রাশিয়ার কাছ থেকে উন্নত ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তি পেয়েছে।

রয়টার্স লিখেছে, দূরপাল্লার আইসিবিএম উৎক্ষেপণের সময় উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, এই পরীক্ষাটি সেসব শত্রুদের প্রতি একটি সতর্কবার্তা যারা দেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকি।

কিমের উদ্বৃতি দিয়ে রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা কেসিএনএ বলেছে, ‘এই পরীক্ষাটি একটি উপযুক্ত সামরিক পদক্ষেপ যা প্রতিদ্বন্দ্বীদের অবহিত করার উদ্দেশ্য সম্পূর্ণরূপে পূরণ করে। যারা ইচ্ছাকৃতভাবে আঞ্চলিক উত্তেজনা বাড়িয়েছে এবং সম্প্রতি আমাদের দেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকি তৈরি করেছে, তাদের জন্য এটা আমাদের পাল্টা পদক্ষেপ হবে।’ 

উত্তর কোরিয়ার দূরপাল্লার আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম) পরীক্ষার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে   দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান ও যুক্তরাষ্ট্র।

একদিন আগেই দক্ষিণ কোরিয়া জানিয়েছিল, উত্তর কোরিয়া আইসিবিএম বা সপ্তম দফায় পারমাণবিক পরীক্ষা চালাতে পারে। কারণ পিয়ংইয়ং তার ক্রমবর্ধমান সামরিক শক্তির প্রতি বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চায়।

রাষ্ট্র-চালিত কোরিয়া ইনস্টিটিউট ফর ডিফেন্স অ্যানালাইসিসের উত্তর কোরিয়ার সামরিক বিষয়ে গবেষণার প্রধান শিন সেউং কি বলেছিলেন, উৎক্ষেপণটি সম্ভবত রাশিয়ার সহায়তায় একটি বিদ্যমান আইসিবিএম-এর উন্নত বুস্টার কর্মক্ষমতা পরীক্ষা করবে।

তার মতে, ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়াকে সহায়তা করার অভিযোগে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে রয়েছে উত্তর কোরিয়া। এ অবস্থায় শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষার উদ্দেশ্য এটা দেখানো হতে পারে যে, তারা চাপের কাছে মাথা নত করবে না এবং কঠোর প্রতিক্রিয়া জানাবে।  

নতুন রেকর্ড

দক্ষিণ কোরিয়ার মতে, বৃহস্পতিবার সকালে পিয়ংইয়ংয়ের আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের উৎক্ষেপণটি উত্তরের সবচেয়ে দীর্ঘতম ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা। যার ফ্লাইট সময় ছিল ৮৭ মিনিট।

কেসিএনএ জানিয়েছে, পরীক্ষাটি তাদের ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতার নতুন রেকর্ড গড়েছে।

ক্ষেপণাস্ত্রটি উত্তরের রাজধানীর কাছের একটি এলাকা থেকে খুবই উল্লম্বভাবে যাত্রা করে এবং জাপানের ওকুশিরি দ্বীপের হোক্কাইডো থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার পশ্চিমে বিস্ফোরিত হয়।

জাপান সরকার জানিয়েছে, উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্রটি প্রায় ৭ হাজার কিলোমিটার উচ্চতায় পৌঁছেছিল এবং ১ হাজার কিলোমিটার দূরত্বে উড়েছিল। এটি এমন একটি দূরত্ব যা যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ডের যে কোনও জায়গাকে সীমার মধ্যে রাখে।