আন্তর্জাতিক

ট্রাম্প-কমলার জয়-পরাজয় নির্ধারণ করবে যেসব কারণ

জনমত জরিপ অনুযায়ী, ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান প্রার্থীর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। গাধা প্রতীক নিয়ে কমলা হ্যারিস নাকি হাতি প্রতীক নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প জয়ী হচ্ছেন, তা জানতে উৎসুক বিশ্ববাসী। 

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, কমলা হ্যারিস এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়-পরাজয় নির্ধারণ করবে কয়েকটি কারণ। 

যেসব কারণে জিততে পারেন ডোনাল্ড ট্রাম্প

১. তিনি ক্ষমতায় নেই নির্বাচনের ক্ষেত্রে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা বড় প্রভাব ফেলে। বর্তমানে মার্কিনিরা বলছেন, তারা মূল্যস্ফীতির কারণে চাপে আছেন। ১৯৭০ সালের পরে করোনা মহামারির সময় ছাড়া দেশটিতে মূল্যস্ফীতি এত উঁচুতে ওঠেনি। ট্রাম্প এখন মার্কিনিদের প্রশ্ন করার সুযোগ পাচ্ছেন যে, আপনারা কি চার বছর আগের (ট্রাম্পের আমল) তুলনায় ভালো আছেন?

২০২৪ সালে অনেক দেশে অর্থনৈতিক কারণে ক্ষমতার পট পরিবর্তন হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রেও এমনটি ঘটতে পারে। পুনরায় সুযোগ পেতে পারেন ট্রাম্প।

২. খারাপ খবরকে পাত্তা দেন না ট্রাম্প ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি হোয়াইট হাউজে নিজ সমর্থকদের হামলার পর আরও নানা কারণে বিচারের মুখোমুখি হয়েছেন ট্রাম্প। কিন্তু, কোনো কিছুকেই পাত্তা দেননি তিনি। এটা তাকে শক্ত মানসিকতার মানুষ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। ট্রাম্প বারবার বলার সুযোগ পেয়েছেন যে, তিনি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। এর ফলে অনেকের সহমর্মিতাও পাচ্ছেন ট্রাম্প।

৩. আবেগীয় ব্যাপার অর্থনীতির বাইরে আবেগীয় ব্যাপার জনগণকে প্রার্থী নির্বাচনে প্রভাবিত করে। অভিবাসন নীতির কারণে এবার বেশি ভোটার টানতে পারবেন ট্রাম্প।

৪. অস্থিতিশীল বিশ্বে শক্তিশালী ব্যক্তি ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন, সে সময় বিশ্বে কোনো বড় যুদ্ধ হয়নি। এটাকে নিজের কৃতিত্ব হিসেবে দাবি করেন তিনি। আমেরিকানদের অনেকেই ট্রাম্পের এই কৃতিত্বকে স্বীকৃতিও দিচ্ছেন। কারণ, ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আমলে ইউক্রেন-রাশিয়া, ইরান-ইসরায়েল এবং গাজা যুদ্ধ শুরু হয়েছে।    

যেসব কারণে জিততে পারেন কমলা হ্যারিস

১. কমলা বাইডেন বা ট্রাম্প নন        ২০২০ সালের নির্বাচনেও অনেক ভোট পেয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। কারণ, ৭০ লাখের বেশি ভোটার বাইডেনের বিপক্ষে ভোট দিয়েছিলেন। সেসব ভোটের অধিকাংশই পড়েছিল ট্রাম্পের ব্যালটে। এবার সেসব ভোট কমলা হ্যারিস পেতে পারেন; কারণ যারা বাইডেনকে অপছন্দ করে বিপক্ষে ভোট দিয়েছিলেন, তারা কমলাকে সমর্থন করতে পারেন।

২. মানবাধিকারকর্মী কমলার গ্রহণযোগ্যতা পেশায় আইনজীবী কমলা হ্যারিসের মানবাধিকারকর্মী হিসেবে সুখ্যাতি রয়েছে। গর্ভপাতের অধিকার রক্ষার বিষয়ে উদ্বিগ্ন ভোটাররা হ্যারিসকে সমর্থন করছেন। দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্য হিসেবে পরিচিত অ্যারিজোনাসহ ১০টি অঙ্গরাজ্যে এ ইস্যুটি নির্বাচনে প্রভাব ফেলতে পারে। এতে কমলার ভোটের পাল্লা ভারী হবে।

৩. সক্রিয় ভোটারদের সমর্থন কমলা উচ্চ শিক্ষিত এবং বয়স্ক ভোটারদের সমর্থন বেশি পাচ্ছেন। এই শ্রেণির মানুষদের ভোট দেওয়ার হার বেশি। অন্যদিকে, ট্রাম্পকে সমর্থন করেন অল্প শিক্ষিত মানুষরা। তারা সাধারণত ভোটকেন্দ্রে কম যান।

৪. তহবিল সংগ্রহ ও নির্বাচনি ব্যয়ে এগিয়ে কমলা মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অত্যন্ত ব্যয়বহুল। ট্রাম্প ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত যে নির্বাচনি তহবিল সংগ্রহ করেছেন, জুলাই থেকে এ পর্যন্ত তার চেয়ে বেশি তহবিল সংগ্রহ করেছেন কমলা। ফলে, নির্বাচনি প্রচারে বেশি ব্যয় করতে পেরেছেন তিনি। ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, নির্বাচনি প্রচারে ট্রাম্পের দ্বিগুণ ব্যয় করেছেন কমলা।