আন্তর্জাতিক

পবিত্র কোরআন পোড়ানোর দায়ে সেই পালুদানের কারাদণ্ড

২০২২ সালে সুইডেনের একটি ঘটনা গোটা বিশ্বজুড়ে চাঞ্চল্য ফেলে দিয়েছিল। সেখানে অতি দক্ষিণপন্থি রাজনীতিবিদ রামুস পালুদান মুসলিমদের বিরোধিতা করতে গিয়ে প্রকাশ্য রাস্তায় পবিত্র কোরআন পুড়িয়েছিলেন। যার জেরে বিশ্বের বহু দেশে প্রতিবাদ করেছিলেন মুসলিম মানুষেরা। এবার সুইডেনের রাসমুস পালুদানকে দোষী সাব্যস্ত করে জেলে পাঠিয়েছেন আদালত।

২০২২ সালে সুইডেনের এই ঘটনার কারণে সুইডেনকে কূটনৈতিক ক্ষেত্রেও এই ঘটনার প্রতিঘাত সহ্য করতে হয়েছিল। তুরস্ক সরাসরি এর বিরোধিতা করেছিল কূটনৈতিক মঞ্চে। প্রশ্ন উঠেছিল সুইডেনের মতো ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রে আদৌ কি শাস্তি হবে ওই ব্যক্তির? গত মঙ্গলবার সুইডেনের একটি আদালতে মামলাটির শুনানি হয়।

গতকাল বুধবার পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডনের খবরে বলা হয়, সুইডেনের আদালত সুইডিশ-ড্যানিশ ডানপন্থি রাজনীতিবিদ রামুস পালুদানকে ২০২২ সালে পবিত্র কোরআনের অবমাননাসহ দুটি বিক্ষোভে জাতিগত বিদ্বেষ উসকে দেওয়ার জন্য মঙ্গলবার চার মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন।

গত আগস্টে, প্রসিকিউটররা তার বিরুদ্ধে ২০২২ সালের এপ্রিলে সুইডেনের দক্ষিণ শহর মালমোতে ‘একটি জাতিগত গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আন্দোলন’ করার অভিযোগ এনেছিলেন। অভিযোগে বলা হয়- পালুদান মুসলমানদের সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্য করার সময় পবিত্র গ্রন্থকে অপমানিত ও আগুন দিয়েছিলেন।

প্রসিকিউটররা তার বিরুদ্ধে ২০২২ সালে আরেকটি ঘটনার জন্যও অভিযুক্ত করেছিলেন, যেখানে তিনি আরব এবং আফ্রিকানদের সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্য করেছিলেন।

মালমো জেলা আদালত বলেছে, আদালত প্রমাণ পেয়েছে যে, পালুদান ‘সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে মুসলমানদের প্রতি অবমাননা প্রকাশ করেছেন। তার কর্মকে ইসলামের সমালোচনা বা রাজনৈতিক প্রচারণা হিসাবে ক্ষমা করা যাবে না।’

বিচারক নিকলাস সোডারবার্গ একটি বিবৃতিতে বলেছেন, ‘জনসমক্ষে সমালোচনা করা অনুমোদিত। উদাহরণস্বরূপ, ইসলাম এবং এমনকি মুসলমানদের বিরুদ্ধেও; কিন্তু একটি গোষ্ঠীর প্রতি অবজ্ঞা প্রকাশ করা ও মন্তব্যের সীমা অতিক্রম করা উচিত নয়।’

অপরাধী ব্যক্তি সুইডেনের পাশাপাশি ডেনমার্কেরও নাগরিক। সুইডেনের পর ডেনমার্কেও তিনি পবিত্র কোরআন পুড়িয়েছিলেন। মুসলিম দেশগুলোর ক্ষোভের প্রেক্ষাপটে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে ডেনমার্ক পবিত্র কোরআন পোড়ানো নিষিদ্ধ করে আইন পাস করে। তবে সুইডেনে এখনো এ ধরনের কোনো আইন নেই। 

অর্গানাইজেশন ফর ইসলামিক কোঅপারেশন (ওআইসি) তার সদস্যদের সুইডেন, ডেনমার্ক এবং অন্যান্য দেশের বিরুদ্ধে যথাযথ রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে, যারা মুসলমানদের পবিত্র গ্রন্থ পোড়ানোর অনুমতি দেয়।

ওআইসি সতর্ক করেছে বলেছে, মত প্রকাশের এ ধরনের আইন নিষিদ্ধ করা প্রয়োজন, যা আগ্রাসী কাজের অনুমতি দেয়। ধর্মের প্রতি ঘৃণা ও অবমাননা ছড়ায় এবং বিশ্ব শান্তি, নিরাপত্তা এবং সম্প্রীতিকে হুমকির সম্মুখীন করে।