আন্তর্জাতিক

গাজায় নিহতদের ৭০ শতাংশই নারী ও শিশু: জাতিসংঘ

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতদের ৭০ শতাংশই নারী ও শিশু বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশন। শুক্রবার (৮ নভেম্বর) সংস্থাটির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

আল জাজিরার খবরে বলা হয়, যুদ্ধের প্রথম ছয় মাসে নিহত ৩৪ হাজার ৫০০ জনের বেশি মানুষের মধ্যে ৮ হাজার ১১৯ জনের তথ্য যাচাই করে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে সংস্থাটি। 

প্রতিবেদনের তথ্যমতে, নিহতদের মধ্যে কম বয়সী থেকে একদম সর্বোচ্চ ৯৭ বছর বয়সী এক নারীও রয়েছে। রয়েছে সদ্য ভূমিষ্ঠ হওয়া নবজাতকও। ১৮ বছরের নিচে যেসকল শিশু নিহত হয়েছে তাদের মধ্যে ৫ থেকে ৯ বছর বয়সী শিশুর সংখ্যা ৪৪ শতাংশ। এর চেয়ে বেশি বয়সী শিশুদের বয়স ১০ থেকে ১৪ বছর।

জাতিসংঘ বলছে, আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের মৌলিক নীতির নিয়মতান্ত্রিক লঙ্ঘনের ইঙ্গিত দিচ্ছে এই প্রতিবেদন।

ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনের প্রধান ভলকার তুর্ক বলেছেন, যুদ্ধের নিয়মকে অবজ্ঞা করছে ইসরায়েল।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৪৪ শতাংশ ক্ষেত্রে একই হামলায় কোনো পরিবারের পাঁচ বা তার বেশি সদস্য নিহত হয়েছে, যা ঘনবসতিপূর্ণ অঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর অস্ত্রের ব্যবহারকে নির্দেশ করে।

প্রতিবেদনে সতর্ক করে বলা হয়েছে, বেসামরিক নাগরিকদের ওপর ‘বিস্তৃত বা নিয়মতান্ত্রিক’ আক্রমণ ‘মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ’ হতে পারে।

বিশ্ব মানবাধিকার সংস্থাটি বলেছে, ইসরায়েলি হামলা যদি সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে একটি জাতিগত বা ধর্মীয় গোষ্ঠীকে ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়, তবে সেটি গণহত্যার অভিযোগও গঠন করতে পারে।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর অবরোধ ও নির্বিচার হামলার কারণে হত্যা, মৃত্যু, আঘাত, অনাহার, অসুস্থতা ও রোগের নজিরবিহীন মাত্রার সৃষ্টি হয়েছে। আর এটি অব্যাহত রয়েছে।

শুক্রবার জাতিসংঘের এই প্রতিবেদনের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে জেনেভায় ইসরায়েলের কূটনৈতিক মিশন বলেছে, তারা এই রিপোর্ট ‘স্পষ্টভাবে প্রত্যাখ্যান’ করছে। ইসরায়েল জাতিসংঘকে ‘অযাচাই করা তথ্যের’ উপর নির্ভর করার জন্য অভিযুক্ত করেছে।

ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধে অন্তত ৪৫ হাজার ৫০৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত ও ১ লাখ ২ হাজার ৬৮৪ জন আহত হয়েছে।