আন্তর্জাতিক

যুক্তরাষ্ট্রের নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন মার্কো রুবিও

যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন সিনেটর মার্কো রুবিওকে পরবর্তী পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে মনোনীত করতে যাচ্ছেন। বিষয়টির সঙ্গে পরিচিত একটি সূত্র ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এ তথ্য জানিয়েছে। 

সূত্র জানিয়েছে, ট্রাম্প জানুয়ারিতে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমতা গ্রহণের পর ফ্লোরিডায় জন্ম নেয়া এই রাজনীতিবিদ আমেরিকার প্রথম লাতিনো পররাষ্ট্রমন্ত্রী হতে পারেন। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জন্য ট্রাম্পের সংক্ষিপ্ত তালিকায় শীর্ষে রয়েছেন মার্কো রুবিও। 

রয়টার্স বলছে, ট্রাম্পের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হওয়ার সংক্ষিপ্ত তালিকায় সম্ভবত সবচেয়ে কঠোর পররাষ্ট্রনীতি সমর্থনকারী প্রার্থী রুবিও। বহু আগে থেকেই আমেরিকার ভূ-রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী যেমন চীন, ইরান ও কিউবার বিষয়ে তিনি শক্তিশালী পররাষ্ট্রনীতির পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন।

তবে গত কয়েক বছরে তিনি তার কিছু অবস্থান কিছুটা নরম করে ট্রাম্পের দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠভাবে সামঞ্জস্য করেছেন। ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের আগের প্রেসিডেন্টদের ব্যয়বহুল ও অকার্যকর যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার জন্য অভিযুক্ত করেন এবং একটি সংযত পররাষ্ট্রনীতির কথা বলে আসছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই সূত্র রয়টার্সকে বলেছেন, যদিও সর্বদাই রূপ পরিবর্তনকারী হিসেবে পরিচিত ট্রাম্প শেষ মুহূর্তে তার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে পারেন, তবে তিনি সোমবার (১১ নভেম্বর) পর্যন্ত তার মনোনীত প্রার্থী হিসেবে রুবিওকে স্থির করেছেন বলে মনে হচ্ছে। 

এ বিষয়ে ট্রাম্প ও রুবিওর প্রতিনিধিরা মন্তব্যের জন্য রয়টার্সের অনুরোধে তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দেননি।

২০১৭ সালের চেয়ে এবার পুরো বদলে যাওয়া একটি বিশ্বের মুখোমুখি হতে হবে ট্রাম্পের নতুন প্রশাসনকে। এই সময়টা আগের চেয়ে বেশি অস্থির ও বিপজ্জনক। ইউক্রেন ও মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ চলছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিপক্ষ রাশিয়া ও ইরানের সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলেছে চীন।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর রুবিওর জন্য ইউক্রেন সংকট একটি বড় হিসেবে এজেন্ডা হবে। ৫৩ বছর বয়সী রুবিও সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, গত এক দশকে রাশিয়া যেসব অঞ্চল দখল করেছে তা পুনরুদ্ধারে জোর না দিয়ে ইউক্রেনের উচিত রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের দিকে মনোযোগী হওয়া। গত এপ্রিল মাসে ইউক্রেনের জন্য ৯৫ বিলিয়ন ডলারের সামরিক সহায়তা প্যাকেজের বিরুদ্ধে ভোট দেয়া ১৫ জন রিপাবলিকান সিনেটরের একজন ছিলেন তিনি।

গত সেপ্টেম্বর মাসে এনবিসিকে রুবিও বলেন, আমি রাশিয়ার পক্ষে নই। কিন্তু বাস্তবতা হলো ইউক্রেনে যুদ্ধ শেষ হওয়ার উপায় হলো একটি আলোচনাভিত্তিক সমাধান।

সিনেটে শীর্ষ চীন-বিরোধী হিসেবে পরিচিত রুবিও। সিনেট ইন্টেলিজেন্স কমিটির শীর্ষ রিপাবলিকান সদস্য হিসেবে তিনি বাইডেন প্রশাসনের ওপর চাপ বজায় রেখেছিলেন। এই বছরের শুরুর দিকে চীনা প্রযুক্তি কোম্পানি হুয়াওয়ের সব বিক্রয় বন্ধ করার দাবি জানান তিনি।

রুবিওর দাদা ১৯৬২ সালে কিউবা থেকে পালিয়ে আমেরিকা আসেন। কিউবা সরকারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক স্বাভাবিককরণের ঘোর বিরোধী রুবিও। ট্রাম্পও একই মনোভাব পোষণ করেন।