নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গতকাল মঙ্গলবার আরকানসাসের সাবেক গভর্নর এবং পশ্চিম তীরে ইহুদি বসতি স্থাপনের কট্টর সমর্থক মাইক হাকাবিকে ইসরায়েলে পরবর্তী মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসেবে মনোনীত করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন।
আজ বুধবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে টাইমস অব ইসরায়েল।
মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প এক বিবৃতিতে বলেন, ‘তিনি (মাইক হাকাবি) ইসরায়েলের মানুষ ও ইসরায়েলকে ভালোবাসেন এবং একইভাবে ইসরায়েলের লোকেরাও তাকে ভালোবাসেন। মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য মাইক অক্লান্ত পরিশ্রম করবে’।
টাইমস অব ইসরায়েল লিখেছে, ৬৯ বছর বয়সী হাকাবি ইসরায়েলের ইভাঞ্জেলিক্যাল খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সবচেয়ে প্রবল সমর্থকদের একজন। ২০০৮ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ ইসরায়েলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে জেমস কানিংহামকে নিযুক্ত করার পর, হাকাবি প্রথম অ-ইহুদি যিনি এই পদের জন্য মনোনীত হলেন।
আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, হাকাবি তার ইসরায়েলপন্থি দৃঢ় অবস্থানের জন্য পরিচিত এবং অধিকৃত ফিলিস্তিনি অঞ্চলে ইসরায়েলি বসতি সম্প্রসারণকে প্রকাশ্যে সমর্থন করেছেন, যা তাকে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে একটি বিতর্কিত ব্যক্তিত্বে পরিণত করেছে।
তিনি ইসরায়েল অধিকৃত পশ্চিম তীরকে ইসরায়েলি ভূখণ্ডের অংশ বলে যুক্তি দেওয়ার জন্য বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠানে বাইবেলের উদ্ধৃতি দিয়েছেন।
২০১৭ সালে সিএনএনকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে হাকাবি বলেছিলেন, ‘এমন কিছু শব্দ আছে যা আমি ব্যবহার করতে অস্বীকার করি। পশ্চিম তীর বলে কিছু নেই। এটি ‘জুডিয়া’ এবং ‘সামারিয়া’ (অঞ্চলটির বাইবেলে উল্লেখিত নাম)। মীমাংসা বলে কিছু নেই। তারা সম্প্রদায়, তারা প্রতিবেশী, তারা শহর। অধিগ্রহণ বলে কিছু নেই।’
আল জাজিরার খবর বলছে, বিশ্বের অনেক দেশ পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন মনে করে, যদিও ইসরায়েল এতে বিরোধিতা করে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ফিলিস্তিনির সমস্যা সমাধানে ইসরায়েল প্রয়োজন ছিল উদার ভারসাম্যপূর্ণ মার্কিন নীতি। কিন্তু কট্টরপন্থি হাকাবিকে নিয়োগ দেওয়ায় বিদ্যমান পরিস্থিতি আরো জটিলতার দিকে গড়াতে পারে।
এদিকে জাতিসংঘে পরবর্তী মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসাবে নিউ ইয়র্কের কংগ্রেস সদস্য এলিস স্টেফানিককে মনোনীত করেছেন ট্রাম্প।
সিএনএনের খবরে বলা হয়েছে, জাতিসংঘে মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসেবে নির্বাচিত করায় ট্রাম্পের প্রশংসা করে স্টেফানিক বলেছেন, তিনি জাতিসংঘের ভুলগুলো জোড়ালোভাবে সামনে আনবেন।
স্টেফানিক বিগত দিনগুলোতে প্রায়ই জাতিসংঘের সমালোচনা করেছেন, বিশেষ করে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের মন্তব্যগুলোর জন্য।
গত মাসে তিনি বলেছিলেন, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ ইসরায়েলের জাতিসংঘ সদস্যপদ প্রত্যাহার করার জন্য চাপ অব্যাহত রাখলে বাইডেন প্রশাসনকে জাতিসংঘের জন্য মার্কিন তহবিলের ‘সম্পূর্ণ পুনর্মূল্যায়ন’ বিবেচনা করা উচিত।