আন্তর্জাতিক

লেবাননে ধ্বংসের মাত্রা ‘ভয়াবহ’: জাতিসংঘ কর্মকর্তা

দক্ষিণ লেবাননে চলমান সংঘাত নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল (ইউএসজি) জিন-পিয়েরে ল্যাক্রোইক্স পরিস্থিতিটিকে ‘ভয়াবহ’ বলে বর্ণনা করেছেন।

আজ বুধবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে তুর্কি বার্তা সংস্থা আনাদোলু এজিন্স।

মঙ্গলবার একটি সংবাদ সম্মেলনে জি পিয়েরে ল্যাক্রোইক্স বলেন, “লেবাননে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী (ইউএনআইএফআইএল) বর্তমানে ‘খুব চ্যালেঞ্জিং ও কঠিন পরিস্থিতিতে’ কাজ করছে। ইউএনআইএফআইএল তার সমস্ত অবস্থানে রয়ে গেছে এবং বেশ কয়েকটি কাজ করছে।” 

ল্যাক্রোইক্স উল্লেখ করেন, অস্থির পরিবেশ জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীর কার্যক্রমকে সীমিত করেছে। মঙ্গলবার শান্তিরক্ষীদের সঙ্গে সংঘর্ষ, গুলি বিনিময় ও বিমান হামলার মতো তিনটি পৃথক ঘটনা ঘটেছে বলে জানান তিনি। 

ল্যাক্রোইক্স বলেন, “হামলার মাত্রা, ধ্বংসের মাত্রা, বাস্তুচ্যুতি, প্রাণহানির মাত্রা সত্যিই ভয়ঙ্কর।” অবিলম্বে শত্রুতা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে ও বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক মানবিক আইনকে সম্মান করার গুরুত্বের ওপর জোর দেন তিনি।

জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল আরও বলেন, “আমি ইসরায়েল ও লেবাননে আমার সফরের সুযোগটি ব্যবহার করি শান্তিরক্ষীদের সুরক্ষায় তাদের বাধ্যবাধকতা সব পক্ষকে স্মরণ করিয়ে দিতে।” 

এরপরও শান্তিরক্ষীদের ওপর হামলার ঘটনা হতাশাজনক বলে স্বীকার করেন তিনি।

তিনি আরও যোগ করেন, “আমাদের কাছে এমন কিছু ভিডিও রয়েছে, যেগুলো শান্তিরক্ষীদের ওপর ইচ্ছাকৃত হামলার ইঙ্গিত দেয়।” 

লেবাননে ইসরায়েলের সাদা ফসফরাস ও ক্লাস্টার যুদ্ধাস্ত্র ব্যবহারের প্রতিবেদন সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে ল্যাক্রোইক্স রিপোর্টগুলোর সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, “এই অস্ত্রগুলো এমন পরিস্থিতিতে ব্যবহার করা উচিত নয় যেখানে বেসামরিক জনগণ সম্ভাব্যভাবে প্রভাবিত হয়।”

তিনি আন্তর্জাতিক মানবিক আইন মেনে চলার জন্য ও বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষার জন্য জাতিসংঘের আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি আরও যোগ করেন, “দুর্ভাগ্যবশত আমরা যা দেখছি তা হলো, এই আহ্বানগুলোতে মনোযোগ দেওয়া হচ্ছে না।”

তুর্কি বার্তা সংস্থা আনাদোলু এজেন্সি জানিয়েছে, গত বছরের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর হিজবুল্লাহ এবং ইসরায়েল আন্তঃসীমান্ত সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে। চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীকে লক্ষ্যবস্তু দাবি করে দক্ষিণ লেবাননে তীব্র বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। গত মাস থেকে দক্ষিণ লেবাননে স্থল অভিযানও চালাচ্ছে ইসরায়েল।   

লেবাননের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের মতে, গত বছরের অক্টোবর থেকে লেবাননে ইসরায়েলি হামলায় ৩ হাজার ৫০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত, প্রায় ১৫ হাজার আহত এবং ১০ লাখেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।

ইসরায়েলি বাহিনী লেবাননে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীর ওপরও হামলা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।