ধর্ষণের অভিযোগে গত সপ্তাহে গ্রেপ্তার হওয়া নরওয়ের ক্রাউন প্রিন্সেস মেটে-মেরিটের বড় ছেলেকে পুলিশ হেফাজত থেকে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে। বুধবার (২৭ নভেম্বর) দেশটির রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম এনআরকে এ খবর জানিয়েছে।
তবে একই সময়ে, অসলো পুলিশ ক্রাউন প্রিন্সেসের বড় ছেলের বিরুদ্ধে নতুন একটি যৌন অপরাধের তদন্ত শুরু করেছে। নতুন অভিযোগ সম্পর্কে বিস্তারিত তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। খবর মার্কিন সংবাদ সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের।
২৭ বছর বয়সী মারিয়াস বোর্গ হোইবি নরওয়ের সিংহাসনের উত্তরাধিকারী ক্রাউন প্রিন্স হাকনের সৎ ছেলে।
বোর্গ হোইবি তার মা মেটে-মেরিট ক্রাউন প্রিন্স হাকনকে বিয়ে করার আগেই জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তার কোনো রাজকীয় উপাধি বা রাজকীয় দায়িত্ব নেই।
বোর্গ হোইবিকে গত সপ্তাহে অসলোতে ‘অচেতন অবস্থায় বা এই কাজটি প্রতিরোধে সক্ষমতা হারানো এক ব্যক্তির সঙ্গে যৌনমিলন’ করার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। ভুক্তভোগীর আইনজীবীর দাবি, ঘটনার দিন তাদের মধ্যে প্রথমবার দেখা হয় এবং তাদের মধ্যে কোনো সম্পর্ক ছিল না।
সেই সময়ে, কথিত ধর্ষণের ঘটনাটি কবে ঘটেছে তা পুলিশ জানায়নি। নরওয়ের সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, বোর্গ হোইবি অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
নরওয়ের বার্তা সংস্থা এনটিবি জানায়, অভিযোগের বিষয়ে রাজপ্রাসাদের কোনো মন্তব্য নেই।
রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম এনআরকে জানিয়েছে, বুধবার (২৭ নভেম্বর) অসলো পুলিশ এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা বোর্গ হোইবিকে আর আটক রাখতে চাইবে না। কারণ গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ মুছে ফেলা হবে এমন কোনো ইঙ্গিত নেই।
এ প্রসঙ্গে এনআরকে-কে বোর্গ হোইবির আইনজীবী ওয়েভিন্ড ব্র্যাটলিয়েন বলেন, “এটি আশ্চর্যজনক নয়। তাকে গ্রেপ্তার করা মোটেও উচিত ছিল না।”
আইনজীবী জানান, বোর্গ হোইবি সম্ভবত বুধবার পরে মুক্তি পাবে।
নরওয়ের ভবিষ্যত রানী মেটে-মেরিটের বড় ছেলে বোর্গ হোইবিকে এর আগে গত ৪ আগস্ট একটি মারামারি ঘটনায় অসলো পুলিশ সাময়িক সময়ের জন্য আটক রেখেছিল। তার বিরুদ্ধে শারীরিক ক্ষতি ও ভাঙচুরের অভিযোগ আনা হয়, তবে সেদিনই তিনি মুক্তি পান। ঘটনার বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেনি পুলিশ। তবে, ভুক্তভোগী ও হামলাকারীর মধ্যে একটি সম্পর্ক ছিল বলে জানায়।
এরপর ক্রাউন প্রিন্সেসের বড় ছেলের বিরুদ্ধে আরো বেশ কয়েকটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে, যার মধ্যে বেশ কয়েকটি নিষেধাজ্ঞার আদেশ লঙ্ঘন করা ও বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালানোর অভিযোগ রয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, তার বিরুদ্ধে অভিযোগকারীদের মধ্যে চারজন নারী এবং একজন পুরুষ।
ধর্ষণের অভিযোগে রাজ পরিবারের সদস্য বোর্গ হোইবির গ্রেপ্তারের ঘটনাটি নরওয়ের শীর্ষ খবরে পরিণত হয়েছিল। দেশটিতে রাজপরিবারের সদস্যরা ব্যাপক জনপ্রিয়।
২৭ বছর বয়সী বোর্গ হোইবি, রাজকীয় দম্পতি এবং তাদের দুই সন্তান প্রিন্সেস ইনগ্রিড আলেকজান্দ্রা ও প্রিন্স সার্ভার ম্যাগনাসের সাথে বসবাস করেন।
মেটে-মেরিটে ২০০১ সালে নরওয়ের ভবিষ্যত রাজা হাকনকে বিয়ে করে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করেছিলেন। কারণ তিনি একজন অবিবাহিত মা ছিলেন; যিনি মাদকের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হওয়া এক ব্যক্তির সঙ্গে জীবনযাপন করেছিলেন।