আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে মিয়ানমারের জান্তা প্রধান মিন অং হ্লাইংয়ের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেছেন আইসিসির প্রধান কৌশুলি করিম খান। বুধবার আইসিসির অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সংবাদ বিবৃতিতে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়। খবর বিবিসির।
নির্যাতনের মুখে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে পালিয়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে সংঘটিত অপরাধ তদন্ত করে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তদন্তের ভিত্তিতে আইসিসি বলছে, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইং অপরাধমূলক দায় বহন করে।
এ বিষয়ে করিম খান বলেন, এটি মিয়ানমার সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কোনো কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আইসিসির প্রথম গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আবেদন। আগামীতে আরও আবেদন করা হবে। তিনি আরও জানান, আইসিসির স্বাধীন বিচারক প্যানেল পরোয়ানা জারি করলে তা বাস্তবায়নে আদালতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সমন্বয় করা হবে।
তিনি বলেন, এর মধ্য দিয়ে আমরা আমাদের সব অংশীদারদের সঙ্গে মিলে দেখাব রোহিঙ্গাদের ভুলে যাওয়া হয়নি। বিশ্বের অন্য সব মানুষের মতো তাদেরও আইনের আশ্রয় পাওয়ার অধিকার রয়েছে।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, প্রধান কৌঁসুলির আবেদনের পর এখন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের তিন বিচারকের একটি প্যানেল রুল জারি করবেন বলে জানিয়েছে প্রসিকিউটরের কার্যালয়। তবে, এ সিদ্ধান্তের বিষয়ে তেমন ধরা বাধা সময় নেই। কিন্তু গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করতে সাধারণত তিন মাসের মতো সময় লাগতে পারে।
তবে, এ বিষয়ে মিয়ানমারের জান্তা সরকারের মুখপাত্রের পক্ষ থেকে এখনো কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
২০১৭ সালে মিয়ানমারের জান্তা বাহিনীর দমন পীড়নের মুখে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় ৭ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা। সরকারি হিসেবে সব মিলে বর্তমানে সে সংখ্যা ১২ লাখের বেশি। যেটা জাতিসংঘ জাতিগত নিধনের উদাহারণ হিসেবে পাঠ্যপস্তুকে লিপিবদ্ধ করার কথা জানায়।
জাতিসংঘের মিয়ানমার বিষয়ে তদন্ত বিভাগের প্রধান নিকোলাস কোমজিয়ান বলেন, মিয়ানমারের সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইং এর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন অন্যান্যদের জন্য একটি বার্তা বহন করে যে কোনো ব্যক্তিই আইনের উর্ধ্বে নয়।
আইসিসির প্রধান কৌশুলি করিম খান বাংলাদেশে আশ্রয় দেওয়া বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সদস্যদের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন। মিয়ানমার আন্তর্জাতিক আদালতের অন্তর্ভুক্ত নয় কিন্তু বাংলাদেশ এর সঙ্গে যুক্ত। ২০১৮ সালে আদালতের বিচারকরা রায় দিয়েছিলেন প্রসিকিউটর সদস্য রাষ্ট্রের ভূখণ্ডে সম্পন্ন হওয়া অপরাধগুলো খতিয়ে দেখতে পারেন যেমন জোরপূর্বক নির্বাসন।