আন্তর্জাতিক

সিরিয়ায় সেনাবাহিনী ও সশস্ত্র গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ, নিহত প্রায় ১০০

সিরিয়ার উত্তর আলেপ্পো প্রদেশে কয়েক ডজন সিরীয় সেনা এবং বিদ্রোহী যোদ্ধা নিহত হয়েছেন। প্রদেশটিতে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে থাকা অন্তত ১০টি এলাকা হায়েত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) সশস্ত্র গোষ্ঠী এবং তার সহযোগী বাহিনী দখল করেছে।

বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা। 

সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটসের (এসওএইচআর) বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ার একটি বৃহৎ এলাকা নিয়ন্ত্রণকারী এইচটিএস গতকাল বুধবার অভিযান চালানোর পর সংঘর্ষে প্রায় ১০০ যোদ্ধা ও সেনা নিহত হয়েছেন। 

সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটসের (এসওএইচআর) সঙ্গে কাজ করা কর্মীরা জানান, এইচটিএসের ৪৪ জন সদস্য এবং মিত্র সশস্ত্র গোষ্ঠীর ১৬ জন সদস্য নিহত হয়েছেন। এ ছাড়াও বিভিন্ন পদমর্যাদার কমপক্ষে চার কর্মকর্তাসহ (সিরিয়ান) শাসক বাহিনীর ৩৭ জন সদস্য নিহত হয়েছেন। শাসক বাহিনীর পাঁচ সদস্যকে বন্দি করা হয়েছে। অস্ত্রের ভাণ্ডার, সাঁজোয়া যান, মেশিনারিজ এবং ভারী অস্ত্রও দখলে নেওয়া হয়েছে।

মনিটরিং গ্রুপটি আরো বলেছে, সংঘর্ষে শিশুসহ বেসামরিক লোকজন নিহত ও আহত হয়েছে। সংঘর্ষের সময় সিরিয়ার সেনাবাহিনী শত শত শেল ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। 

সিরিয়ার সেনাবাহিনীর একটি সূত্র জানিয়েছে, এইচটিএস যোদ্ধারা এবং তাদের সহযোগীরা আলেপ্পো শহরের উপকণ্ঠ থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার (ছয় মাইল) এবং নুবল ও জাহরা এলাকা থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে অগ্রসর হয়েছিলেন। সেখানে দুটি প্রধান শিয়া শহরে ইরান সমর্থিত হিজবুল্লাহ গ্রুপের শক্তিশালী সশস্ত্র উপস্থিতি রয়েছে। এইচটিএস বাহিনী আলেপ্পোর পূর্বে আল-নায়রাব বিমানবন্দরেও আক্রমণ করেছে, সেখানে ইরানপন্থি যোদ্ধাদের ফাঁড়ি রয়েছে।

সিরিয়ার সরকারি বার্তা সংস্থা এই সংঘর্ষের খবর দেয়নি। তবে সরকারপন্থি ওয়েবসাইটগুলো বলেছে, সেনাবাহিনী এইচটিএসের গোপন আস্তানায় গুলি চালিয়েছে এবং কয়েক ডজন যোদ্ধাকে হত্যা করেছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, আল-আসাদের বিরোধীদের শেষ আশ্রয়স্থল আলেপ্পোর শত শত পরিবার তুর্কি সীমান্তে নিরাপদ এলাকায় পালিয়ে গেছে।

সশস্ত্র গোষ্ঠী এইচটিএস দীর্ঘদিন ধরে সিরিয়ার সরকার এবং রাশিয়ান বাহিনীর লক্ষ্যবস্তু। ট্রান্সন্যাশনাল আল-কায়েদা গোষ্ঠীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে এইচটিএস সাম্প্রতিক সময়ে নিজেদের আলাদা একটি ব্র্যান্ড তৈরি করেছে। সিরিয়ায় স্থানীয় লক্ষ্যে নিজেদের আরো মধ্যপন্থি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে এবং উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ার সবচেয়ে শক্তিশালী বিদ্রোহী গোষ্ঠীতে পরিণত হয়েছে।