ভারতের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ লোকসভার সদস্য হিসেবে শপথ নিয়েছেন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। আজ বৃহস্পতিবার সংবিধান হাতে শপথ নিয়েছেন তিনি।
হিন্দুস্তান টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, ভারতের সবচেয়ে পুরোনো রাজনৈতিক দল কংগ্রেসে নেহেরু-গান্ধী পরিবারের ঐতিহ্য প্রায় ১০০ বছরের। সেই পরিবারের সর্বকনিষ্ঠ সদস্য হিসেবে অবশেষে পার্লামেন্টে প্রবেশ করলেন ৫২ বছর বয়সী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। কেরালার ওয়ানাড় আসনের উপনির্বাচনে জয়ের সুবাদে জীবনে প্রথমবারের মতো আইনপ্রণেতা হলেন তিনি।
প্রিয়াঙ্কা লোকসভায় আসছেন, এই খবর পেয়ে পার্লামেন্ট চত্বরে হাজির হয়েছিলেন কংগ্রেসের অন্যান্য এমপিরা। ‘প্রিয়াঙ্কা স্বাগতম’ বলে স্লোগানও দিচ্ছিলেন তারা। গাড়ি থেকে নেমে প্রিয়াঙ্কা জানান, তিনি খুবই খুশি। তার পরেই বড়ভাই রাহুল গান্ধী, মা সোনিয়া গান্ধী এবং স্বামী রবার্ট বাট্রার সঙ্গে পার্লামেন্টের ভেতর প্রবেশ করেন তিনি। সেখানে ডান হাতে লাল-কালো মলাটের সংবিধান হাতে নিয়ে শপথ নেন। শপথ শেষে বড়ভাই রাহুল গান্ধীর পাশের আসনে বসেন প্রিয়াঙ্কা।
প্রিয়াঙ্কা গান্ধী এমপি হিসেবে শপথ নেওয়ায় গান্ধী পরিবারের তিন সদস্য সোনিয়া, রাহুল এবং প্রিয়াঙ্কা- সবাই এখন এমপি। কংগ্রেস, নেহেরু-গান্ধী পরিবার এবং ভারতের ইতিহাসে প্রথমবার এমন ঘটল।
তাছাড়া, প্রিয়াঙ্কা এমপি হওয়ার কারণে গান্ধী পরিবারের পরপর তিন প্রজন্মের চার নারীকে লোকসভার সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেল। তাদের মধ্যে প্রথমজন হলেন ভারতের সাবেক ও একমাত্র নারী প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী, দ্বিতীয়জন হলেন কংগ্রেসের সাবেক সভানেত্রী ও ইন্দিরা গান্ধীর জৈষ্ঠ্য পুত্রবধূ সোনিয়া গান্ধী। তৃতীয়জন হলেন ইন্দিরা গান্ধীর কনিষ্ঠ পুত্রবধূ ও রাহুল-প্রিয়াঙ্কার চাচি মানেকা গান্ধী। যদিও মানেকার সঙ্গে বর্তমানে কংগ্রেসের কোনো সম্পর্ক নেই। বরং, অতীতে তিনি কংগ্রেসের বিরোধী পক্ষ, বিজেপির টিকিটে জিতে এমপি এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হয়েছেন।
আর এবার কংগ্রেসের টিকিটে ওয়েনাড উপনির্বাচনে জিতে এমপি হলেন প্রিয়াঙ্কা। তিনি ইন্দিরা গান্ধীর নাতনি।
এবারের লোকসভা নির্বাচনে উত্তরপ্রদেশের রায়বরেলি এবং কেরালার ওয়ানাড়- এই দুই কেন্দ্র থেকেই ভোটে জিতে সাংসদ হন রাহুল গান্ধী। পরবর্তীতে তিনি ওয়ানাড় আসনটি ছেড়ে দেন।
এরপর ওয়েনাড় লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে প্রথমবারের জন্য ভোটের ময়দানে প্রার্থী হিসাবে নামেন প্রিয়াঙ্কা। আর প্রথমবারেই বাজিমাত করেন। তিনি তার নিকটবর্তী প্রতিদ্বন্দ্বী সিপিএম-এর সত্যান মোকেরিকে ৪ লাখেরও বেশি ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেন।