বিদ্রোহীদের আক্রমণের মুখে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ দেশ ছেড়েন বলে খবর রয়েছে। সেই ঘটনার প্রায় ২৪ ঘণ্টা পার হয়ে গেছে। তবে এখনও তার খোঁজ মেলেনি। এখন বিলিয়ন ডলারের প্রশ্ন- তাহলে কোথায় পালিয়ে গেলেন বাশার? তিনি কি বেঁচে আছেন না কি মারা গেছেন; তার বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে?
বাশারের সবচেয়ে বড় মিত্র রাশিয়া অবশ্য বেশ কয়েক ঘণ্টা চুপ থাকার পর মুখ খুলেছে। তবে তারা বাশারের অবস্থান নিয়ে কোনো তথ্য দেয়নি।
রবিবার রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, বিদ্রোহী বাহিনী রাজধানী দামেস্কের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর বাশার আল-আসাদ প্রেসিডেন্টের পদ থেকে ‘পদত্যাগ করেছেন’ এবং ‘সিরিয়া ছেড়েছেন’।
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাশারের অবস্থান সম্পর্কে আর কোনো তথ্য দেয়নি। তবে এটিই প্রথম রাশিয়ার পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি, যাতে বলা হয়েছে বাশার দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন।
অবশ্য সিরিয়া গৃহযুদ্ধে দীর্ঘদিন বাশারকে সহযোগিতা করে এসেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি এখনো বাশারের বিষয়ে টু-শব্দটিও করেননি।
এক সপ্তাহ আগে দামেস্কে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা হওয়ার পর থেকে আসাদের আর কোনো প্রকাশ্য ছবি দেখা যায়নি। সেই দিন তিনি বিদ্রোহীদের নির্মূল করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, যখন বিভিন্ন এলাকা দখল করে নিচ্ছিল বিদ্রোহীরা।
রবিবার ভোরে বিদ্রোহী যোদ্ধারা কোনো প্রতিরোধ ছাড়াই শহরে প্রবেশ করার পর ইসলামপন্থি জঙ্গিগোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) এবং তার সহযোগীরা ঘোষণা করে ‘অত্যাচারী বাশার আল-আসাদ পালিয়ে গেছে’।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ও ফ্লাইট পর্যবেক্ষণকারী সংস্থাগুলোর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, তিনটি দেশে পালিয়ে যেতে পারেন বাশার। আবার পালিয়ে যাওয়ার সময় তাকে বহনকারী বিমানটি বিধ্বস্তও হতে পারে বলে ইরানি ও ইসরায়েলি দুয়েকটি গণমাধ্যমে বলা হচ্ছে।
তার মধ্যে রয়েছে ইরান, রাশিয়া ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের নাম। এখন কথা হলো- এই তিন দেশের মধ্যে কোনো দেশে গেছেন তিনি।
বিবিসি বলছে, একটি ফ্লাইটে করে বাশার সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজাহতে অবতরণ করে থাকতে থাকতে পারেন। কারণ, শনিবার গভীর রাত ১২টার পর দামস্ক-এর বিমানবন্দর থেকে একটি ফ্লাইট ছেড়ে গেছে, যার গন্তব্য ছিল শারজাহ। তবে আমিরাত কর্তৃপক্ষ এ নিয়ে কোনো কথা বলেনি।
অবশ্য ফ্লাইটরাডার টোয়েন্টিফোর নাম ফ্লাইট পর্যবেক্ষণকারী সংস্থাটি বলছে, রাত সাড়ে তিনটার পর একটি ফ্লাইট দামেস্ক ছেড়ে যায়, যার শেষ গন্তব্যও ছিল আমিরাতের দিকে। তবে শেষ পর্যন্ত বিমানটি রাডার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
আমিরাতে যদি না গিয়ে থাকেন, তাহলে ইরান বা রাশিয়ার কোনো সামরিক ঘাঁটিতে পালাতে পারেন বাশার- এমনটিই উঠে আসছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের বিশ্লেষণ। তবে ঠিক করে এখনও কোনো তথ্য মেলেনি।