মুখে ‘দেশপ্রেমের’ কথা বললেও আড়ালে রয়েছে ব্যবসায়িক ক্ষতির ‘রাগ’। আর সেই সুযোগকেই কাজে লাগিয়েছেন ভারতের ব্যবসায়ীরা। বিষয়টি নিয়ে রাখডাক না রেখে প্রকাশ্যেই স্বীকার করে নিলেন শিলিগুড়ির হোটেল ব্যবসায়ীরা।
সোমবার (৯ ডিসেম্বর) সাংবাদিক সম্মেলন করে শিলিগুড়ি হোটেলে বাংলাদেশিদের বয়কট করার ঘোষণা দেন শিলিগুড়ির হোটেল মালিক ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন।
শিলিগুড়ি হোটেল মালিক ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক উজ্জ্বল ঘোষ সম্মেলনে বলেন, ‘‘গত ৮ আগস্টের পর বাংলাদেশে যেভাবে ভারত বিরোধিতা হচ্ছে, যেভাবে ভারতের পতাকার অবমাননা হচ্ছে সেই দিকে তাকিয়ে ব্যবসায়িক ক্ষতি হলেও বাংলাদেশিদের বয়কট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা।’’
এরপর ‘ব্যবসায়িক ক্ষতি’ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে কথা প্রসঙ্গে এই হোটেলমালিক নেতা স্বীকার করে নেন, গত ৫ আগস্টের পর শিলিগুড়ির হোটেলে বাংলাদেশিদের আনাগোনা একেবারেই কমে গিয়েছে। এমন অবস্থায় তাদের বয়কট করলে ক্ষতির সম্মুখীন হবেন না হোটেল ব্যবসায়ীরা। আর তার জন্যই বয়কটের সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন তারা।
হোটেল মালিকরা বলেন, বাংলাদেশিরা যারা ফুলবাড়ী সীমান্ত দিয়ে শিলিগুড়িতে আসেন তারা কেউ শিলিগুড়িতে থাকেন না, আমরা খতিয়ে দেখেছি তারা সরাসরি দার্জিলিং বা সিকিমে চলে যান। যেহেতু ফুলবাড়ী সীমান্ত দিয়ে পাহাড় কাছাকাছি হয় তাই বাংলাদেশিরা এখানকার হোটেল ব্যবহার করেন না সরাসরি পাহাড়ে চলে যান। এই এলাকার হোটেল ব্যবসায়ীদের কোনরকম ব্যবসার প্রভাব পড়ে না।
আবার চ্যাংড়াবান্ধ সীমান্ত দিয়ে যেসব বাংলাদেশিরা আসেন তারা শিলিগুড়ির হোটেলে কয়েকজন থাকেন। হোটেলে থাকার প্রধান কারণ দুটো। এক, তারা মেডিকেল ভিসাধারী নয়, তারা স্টুডেন্ট। পরিসংখ্যান দেখলে দেখা যাবে, এমন ট্যুরিস্টের সংখ্যা স্বাভাবিক সময়ে শিলিগুড়ি এলাকায় ছিল সর্বনিম্ন ২০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ২৫ হাজার। কিন্তু গত কয়েক মাসে খুব বেশি হলে ২০০০ পর্যটক এসেছে। দেশের স্বার্থে এটুকু ক্ষতি আমরা সামলে দিতে পারব।
এরপরেই এই ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘আগে ২০০০ হলেও এখন সারা মাসে ৩০০ জন বা তারও কম পর্যটক শিলিগুড়ির ওপর নির্ভর করে। আমাদের একেবারেই ব্যবসা নেই। তাই বয়কট করলেও প্রভাব পড়বে না।’’