গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ৪৫ হাজার ছাড়াল। সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে। খবর আল জাজিরার।
মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় ৫২ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ২০৩ জন আহত হয়েছেন। এর ফলে গাজায় গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি হামলায় নিহত মোট ফিলিস্তিনির সংখ্যা ৪৫ হাজার ২৮ জনে পৌঁছেছে। একইসঙ্গে অবরুদ্ধ নগরীতে আহতের সংখ্যা এখন ১ লাখ ৬ হাজার ৯৬২ জনে পৌঁছেছে।
মন্ত্রণালয় আরো জানিয়েছে, অনেক মানুষ এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে আছে। ইসরায়েলের অব্যাহত হামলা ও বাঁধার কারণে উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছেন না।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের দাবি, এই হামলায় প্রায় ১২০০ নিহত ও দুই শতাধিক ইসরায়েলিকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে গেছে হামাস যোদ্ধারা। এর জবাবে ওই দিনই গাজায় বিমান হামলা ও পরে স্থল অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। ১৪ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো এ হামলা অব্যাহত আছে।
জাতিসংঘের মতে, গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে ভূখণ্ডের ৮৫ শতাংশ বাসিন্দা অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছে। সেই সঙ্গে অঞ্চলটির ৭০ শতাংশ অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে।
জাতিসংঘ আরও বলছে, দীর্ঘ সময় ধরে চলা সংঘাতের কারণে মানবিক সংকটে দিন পার করছেন ফিলিস্তিনিরা। উপত্যকাটির ২৩ লাখেরও বেশি বাসিন্দা চরম ক্ষুধা ও ভয়াবহ অপুষ্টিতে ভুগছেন। ৩৬টি হাসপাতালের মধ্যে মাত্র ১৭টি আংশিকভাবে চালু রয়েছে। ৮৪ শতাংশ স্বাস্থ্যসেবা সুবিধাগুলো সরবরাহ এবং ওষুধের মারাত্মক অভাবের মধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে।
গাজায় ইসরায়েলি হামলা নিহত ৪৫ হাজার ফিলিস্তিনির মধ্যে ৭০ শতাংশই নারী ও শিশু বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘে প্রস্তাব পাস হওয়া সত্ত্বেও ইসরায়েল অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে তার নৃশংস আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে।
আল জাজিররার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আজ সোমবারও গাজা জুড়ে তীব্র বিমান ও স্থল হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। এমনকি স্কুল, আশ্রয়কেন্দ্র এবং হাসপাতালেও ব্যাপক বিমান হামলা ও স্থল অভিযানের খবর পাওয়া গেছে।