ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের নেতা ইসমাইল হানিয়াকে হত্যার দায় স্বীকার করেছে ইসরায়েল। গত জুলাইয়ে ইরানের রাজধানী তেহরানে ইসমাইল হানিয়াকে হত্যার প্রায় ৫ মাস পর গতকাল সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) এর দায় স্বীকার করেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ।
আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়েমেনের ইরান সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীদের শীর্ষ নেতাদের সতর্ক করে এক ভাষণে বলেন, “আমরা হুতিদের বিরুদ্ধে কঠোর হামলা করব এবং তাদের নেতৃত্বকে ধ্বংস করে দিব। যেমনটা (ইসমাইল) হানিয়া, (ইয়াহিয়া) সিনওয়ার এবং (হাসান) নাসরাল্লাহর সঙ্গে তেহরান, গাজা এবং লেবাননে করেছিলাম। সেটিই আমরা হোদেইদা এবং সানায় (ইয়েমেনের রাজধানী) করব।”
হানিয়াকে হত্যার ঘটনায় ইসরায়েলকে দায়ী করে আসছিল ইরান ও হামাস। তবে হত্যাকাণ্ডে ইসরায়েলের সম্পৃক্ততার কথা এর আগে স্বীকার করেনি দেশটি। এ ঘটনার প্রায় ৫ মাস পর প্রতিরক্ষামন্ত্রীর এই বক্তব্যের মাধ্যমে জুলাইয়ে হানিয়াকে হত্যাকাণ্ডে ইসরায়েলের সম্পৃক্ততা স্বীকার করল দেশটি।
কাৎজ বলেন, “যে কেউ ইসরায়েলের দিকে হাত বাড়াবে, সেই হাত কেটে ফেলা হবে। আর আইডিএফের (ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী) লম্বা হাত তাদের ওপর কঠিন হামলা চালাবে।”
প্রসঙ্গত, হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়া গত জুলাইয়ে ইরানের রাজধানীতে একটি ভবনে হামলার ঘটনায় নিহত হন। ঘটনার একদিন আগেই ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন হানিয়া।
২০১৭ সাল থেকে ফিলিস্তিনি সংগঠন হামাসের প্রধান হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন ইসমাইল হানিয়া। তিনি হামাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধানের পদে থাকলেও তাকেই এই গোষ্ঠীর শীর্ষ নেতা মনে করা হতো। তিনি গাজায় যুদ্ধবিরতি বিষয়ক আলোচনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছিলেন।
তার হত্যাকাণ্ডের পর হামাস ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে নতুন নেতা হিসেবে ঘোষণা করে। গত অক্টোবরে ইসরায়েলের সামরিক অভিযানে তিনিও নিহত হন। এরপর থেকে হামাস এখনো নতুন নেতা বেছে নেয়ার প্রক্রিয়ায় আছে।
অন্যদিকে, হাসান নাসরাল্লাহ ছিলেন লেবাননে ইরান সমর্থিত হিজবুল্লাহর নেতা। সেপ্টেম্বরে বৈরুতে ইসরায়েলের সামরিক অভিযানে তিনি নিহত হন। ইসরায়েলের সাথে সীমান্তে প্রতিনিয়তই লড়াই করছিল হিজবুল্লাহ।
ইয়েমেনের রাজধানীসহ বেশিরভাগ অংশ ইরান সমর্থিত হুতিদের নিয়ন্ত্রণে। ফিলিস্তিনির গাজায় ১ বছরেরও বেশি সময় ধরে ইসরায়েলের নির্বিচার হামলার প্রতিবাদে হুতিরা ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালাচ্ছে। তারা গাজা যুদ্ধ শেষ না হওয়া পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে চাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।