আন্তর্জাতিক

ভারতের তিন রাজ্যে বাংলাদেশি সন্দেহে ২১ জন গ্রেপ্তার 

অবৈধ বাংলাদেশিদের বিরুদ্ধে ভারতজুড়ে চলছে পুলিশি অভিযান। শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) দিনভর অভিযানে ভারতের মহারাষ্ট্র, পশ্চিমবঙ্গ ও ত্রিপুরায় বাংলাদেশি সন্দেহে ২১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

মহারাষ্ট্র এটিএস (অ্যান্টি টেররিস্ট স্কোয়াড) দাবি করেছে, শনিবার ভারতের মহারাষ্ট্রে ১৩ জনকে বাংলাদেশি নাগরিক সন্দেহে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এটিএস বলছে, বেআইনিভাবে ভারতে ঢুকে লুকিয়ে থাকার অভিযোগে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।  

মহারাষ্ট্র এটিএস আরো জানায়, ২৪ ঘণ্টা বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালানো হয়েছে। নভি মুম্বাই, থানে ও শোলাপুর এলাকায় স্থানীয় পুলিশের সাহায্য নিয়ে অভিযান চলেছে। ৭ পুরুষ ও ৬ নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ফরেনার্স অ্যাক্ট এবং আরো নানা ধারায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের দাবি, বাংলাদেশি সন্দেহে গ্রেপ্তার এসব নাগরিক ভারতে এসে ভুয়া নথি দিয়ে আধার কার্ড বানিয়েছিলেন।

এদিকে, পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদের জলঙ্গি সীমান্তবর্তী এলাকায় ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বিএসএফ (বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স) বাংলাদেশি সন্দেহে তিন অনুপ্রবেশকারীকে গ্রেপ্তার করেছে। গোপন সূত্রে পাওয়া তথ্যে বিএসএফ সীমান্ত এলাকায় তল্লাশি অভিযান শুরু করে। এরপরই তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। 

গ্রেপ্তার তিনজন হলেন— কামাল হোসেন, শাহাদাত আলী ও হযরত আলী। তারা বাংলাদেশের রাজশাহী জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে এসেছেন বলে বিএসএফ দাবি করেছে।  

অনুপ্রবেশের আশঙ্কায় পেট্রাপোল-বেনাপোল সীমান্ত-সংলগ্ন সীমান্তবর্তী এলাকার গ্রামগুলোতে বসানো হয়েছে সিসিটিভি। 

এদিকে, দুটি পৃথক অভিযানে ত্রিপুরা সীমান্ত দিয়ে ভারতে অনুপ্রবেশের সময় আগরতলা স্টেশন থেকে ফের গ্রেপ্তার হয়েছেন ৭ জন। স্থানীয় সূত্রের দাবি, তাদের মধ্যে ৫ জন বাংলাদেশি নাগরিক এবং ২ জন ভারতীয় দালাল। 

ত্রিপুরা পুলিশের বরাতে সূত্রে খবর, শুক্রবার বেআইনিভাবে সীমান্ত পার করে আগরতলা স্টেশনে আসেন ৫ বাংলাদেশি নাগরিক। তাদের সঙ্গে ছিলেন দুই দালাল। এই দুজনের মধ্যে একজন নারী, যার বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনায়। আরেক দালালের বাড়ি বাঁকুড়া।

এসব গ্রেপ্তারের বিষয়ে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)-এর পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর থেকে গত পাঁচ মাস ধরে ত্রিপুরা, আসাম, পশ্চিমবঙ্গের মত সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলোতে অনুপ্রবেশ ঘটছে বলে অভিযোগ। শুক্রবারই আগরতলা রেল পুলিশের তরফে এক পরিসংখ্যান দিয়ে জানানো হয়েছে, গত পাঁচ মাসে আগরতলা রেল স্টেশনসহ ত্রিপুরার বিভিন্ন জায়গায় ত্রিপুরা রাজ্য পুলিশ, বিএসএফ, রেল পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে বাংলাদেশি সন্দেহে প্রায় ৬০০ জন  অনুপ্রবেশকারীকে গ্রেপ্তার করেছে। এছাড়া ৬৩ জন রোহিঙ্গা নাগরিককে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তারের পর প্রত্যেকেই জানিয়েছেন, অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করে কাজের সন্ধানে দিল্লি, বেঙ্গালুরু, হায়দ্রাবাদসহ ভারতের বিভিন্ন শহরে যাচ্ছিলেন।