আবু বকর ইয়ামিন : আগামী ১১ ও ১২ মে হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ২৯তম জাতীয় সম্মেলন। এ সম্মেলনে উপলক্ষে নেতাকর্মীদের মধ্যে বিরাজ করছে ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনা। সম্মেলনে মধ্য দিযে উঠে আসবে আগামীর নেতৃত্ব। আগামীর নেতৃত্ব কেমন হওয়া উচিত, এ বিষয়ে রাইজিংবিডির সঙ্গে কথা বলেছেন কেন্দ্রীয় শীর্ষ পদপ্রত্যাশী বর্তমান ছা্ত্রলীগের সহসভাপতি মেহেদী হাসান রনি। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে যারা আপোশহীন, এমন নেতৃত্বই চাই। কিন্তু এর জন্য আবার বাইরে চাকচিক্য ভিতরে ফাঁপা এমন নেতৃত্বও দরকার নাই। মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযুদ্ধের দায়, এই রাষ্ট্রের মূলনীতি, এই রাষ্ট্রের গতিপথ, দলীয় রাজনীতির সীমা-পরিসীমা এবং গতিপথ বুঝে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। রাইজিংবিডি : দেশের ছাত্ররাজনীতি নিয়ে আপনার অভিমত কী? মেহেদী হাসান রনি : আপনি জানেন, বাংলাদেশের ছাত্ররাজনীতির একটি গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস রয়েছে। এই দেশে ছাত্ররাজনীতির শুরুটা হয়েছে জাতীয় রাজনীতির গতিপথ নির্ধারণের জন্য। কেননা এটার শুরুই হলো উপনিবেশবিরোধী মনোভাব থেকে। যার ফলে দেখা যায়, ছাত্ররাজনীতিতে আদর্শ ধারণের বিষয়টা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। ছাত্ররাজনীতির পুরো অংশ জুড়ে ছিল আদর্শের বিস্তার। এর একটা ছেদ ঘটে ৭৫-এ বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে। তারপর ১৯৯০ সাল পর্যন্ত আদর্শের ধারাটা বিরাজমান ছিল। বৈষয়িকতার হাতছানি পুরোপুরি গ্রাস করতে সফল ছিল না। কিন্তু আজ ছাত্ররাজনীতিতে বৈষয়িকতার জয়জয়কার। খুব কম সংখ্যক নেতাকর্মী আদর্শ ধারণ করে রাজনীতি করে বলে আমার ধারণা। রাইজিংবিডি : ছাত্রলীগের বর্তমানে কমিটি নিয়ে কিছু বলেন। মেহেদী হাসান রনি : বাংলাদেশ ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটি ২৮তম সম্মেলনের মধ্য দিয়ে ২৬ জুলাই ২০১৫ সালে দায়িত্বভার গ্রহণ করে। প্রথম দিকে দায়িত্বভার বুঝে নেওয়ার জন্য একটু সময় নিলেও আস্তে আস্তে বিভিন্ন কার্যক্রমের মধ্যে বিতর্কের জন্ম দেয়। এটা অস্বীকার করার উপায় নাই। তবে প্রথম দিকে এই কমিটি যূথবদ্ধভাবে অনেক ভালো কাজও করেছে। কিন্তু সর্বোচ্চ নেতৃত্ব রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সাংগঠনিক কাজের চাইতে কমিটি করাটাকেই বেশি গুরুত্ব দিতে গিয়ে বিভিন্ন জায়গায় অনুপ্রবেশ ঘটিয়েছে। তবে আগামীর নেতৃত্বের মধ্য দিয়েই আগামীর নেতৃত্ব এই ইমেজ সংকট কাটিয়ে উঠবে। সেক্ষেত্রে মেধাবী, দক্ষ ও পরিপক্করাই নেতৃত্বে আসবে বলে প্রত্যাশা করি। রাইজিংবিডি : আগামীতে ছাত্রলীগে কেমন নেতৃত্ব চান? মেহেদী হাসান রনি : বর্তমান যুগ মিডিয়ার যুগ। মিডিয়া ফেইস করাটা একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দেখা দিয়েছে। আপনি ভালো কাজ করলেই হবে না। সেটার রিপ্রেজেন্টেশন দরকার। বর্তমান ছাত্রলীগের নেতৃত্বের ক্ষেত্রে এই ব্যর্থতা বড় হয়ে দেখা দিয়েছে। কিন্তু এর জন্য আবার বাইরে চাকচিক্য ভিতরে ফাঁপা এমন নেতৃত্বও দরকার নাই। মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযুদ্ধের দায়, এই রাষ্ট্রের মূলনীতি, এই রাষ্ট্রের গতিপথ, দলীয় রাজনীতির সীমা-পরিসীমা এবং গতিপথ বুঝে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে যারা আপোশেহীন, এমন নেতৃত্বই চাই। রাইজিংবিডি : ছাত্রলীগের বয়সসীমা সম্পর্কে কিছু বলুন। মেহেদী হাসান রনি : ছাত্ররাজনীতির ক্ষেত্রে বয়সের চাইতে গুরুত্বপূর্ণ হলো, সে ছাত্র কি না? শিক্ষার্থী স্বার্থের বাইরে সে অন্য কোনো স্বার্থে যুক্ত আছে কি না? মনে করেন, একজনের বয়স আছে কিন্তু ছাত্রের পাশাপাশি সে ব্যবসায়ী। তখন সে ছাত্রদের স্বার্থের বাইরে ব্যক্তিগত স্বার্থটাই দেখবে। ছাত্রলীগের বয়সসীমা নির্ধারণ ছিল সময়ের ব্যাপার। আজ আবার সময় এসেছে এটা পুনরায় বিবেচনা করার। বয়সের সীমা থাকা জরুরি বটে তবে সেটা দক্ষ নেতৃত্বের চাইতে বেশি না। রাইজিংবিডি : আপনি বর্তমানে কোথায় পড়াশোনা করছেন? মেহেদী হাসান রনি : আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাবিজ্ঞান বিভাগ থেকে বিএ (সম্মান) ও এমএ সম্পন্ন করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে এলএলবিতে অধ্যয়ন করছি। রাইজিংবিডি : আপনাকে ধন্যবাদ। মেহেদী হাসান রনি : আপনাকেও ধন্যবাদ। রাইজিংবিডির সর্বাঙ্গীন সাফল্য কামনা করি। রাইজিংবিডি/ঢাকা/৮ মে ২০১৮/ইয়ামিন/রফিক