রাজধানীর হলি আর্টিজানে রেস্টুরেন্টে হামলা-মামলায় আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানির জন্য পেপারবুক তৈরির কাজ শেষ পর্যায়ে। কিছুদিনের মধ্যে এই পেপারবুক বিজি প্রেস থেকে সুপ্রিম কোর্টে পৌঁছাবে। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে নিয়মিত আদালতে আপিল শুনানির পদক্ষেপ নেবে রাষ্ট্রপক্ষ।
এর আগে, ২০১৯ সালের ৩০ নভেম্বর মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত ৭ আসামির ডেথরেফারেন্স ও মামলার নথি হাইকোর্টে আসে। এরপরই প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এই মামলার পেপারবুক তৈরির নির্দেশ দেন।
নিয়মানুযায়ী—পেপারবুক প্রস্তুত হয়ে সুপ্রিম কোর্টের আসার পর প্রধান বিচারপতি আসামিদের আপিল ও ডেথ রেফারেন্স শুনানির জন্য হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ নির্ধারণ করে দেবেন।
পেপারবুক তৈরির অগ্রগতি ও মামলার পরবর্তী কার্যক্রম বিষয়ে জানতে চাইলে সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র মোহাম্মদ সাইফুর রহমান বলেন, ‘আশা করি, কিছু দিনের মধ্যেই বিজি প্রেস (সরকারি ছাপাখানা) থেকে তৈরি পেপারবুক হাতে পাবো। এরপর আপিল শুনানির পরবর্তী কাজ হাতে নেবো।’
উচ্চ আদালতে আপিল শুনানির বিষয়ে জানতে চাইলে রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, ‘এই হত্যাকাণ্ড সারাবিশ্বে আলোড়ন তৈরি করেছিল। এই মামলার আপিল ও ডেথ রেফারেন্স শুনানির জন্য আমরা পদক্ষেপ নেবো।’
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, করোনা কেটে গেলে সাধারণ আদালতে মামলাটি আপিল শুনানির জন্য তালিকাভুক্ত করার পদক্ষেপ নেবো। মামলা যত দ্রুত শুনানি করা যায়, তারই চেষ্টা করবো।’
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর হলি আর্টিজানে হামলার মামলায় ৭ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড ও এক আসামিকে খালাস দেন ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ মজিবুর রহমান।
মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামিরা হলো—মূল পরিকল্পনাকারী তামিম চৌধুরীর সহযোগী আসলাম হোসেন ওরফে রাশেদ ওরফে আবু জাররা ওরফে র্যাশ, অস্ত্র ও বিস্ফোরক সরবরাহকারী নব্য জেএমবি নেতা হাদিসুর রহমান সাগর, জঙ্গি রাকিবুল হাসান রিগ্যান, জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব ওরফে রাজীব গান্ধী, হামলার অন্যতম পরিকল্পনাকারী আব্দুস সবুর খান (হাসান) ওরফে সোহেল মাহফুজ, শরিফুল ইসলাম ও মামুনুর রশিদ। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানার আদেশও দেন আদালত। রায়ে মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান নামে এক আসামিকে খালাস দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ১ জুলাই রাজধানীর গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা চালিয়ে ২২ জনকে হত্যা করে জঙ্গিরা। ঢাকা/মেহেদী/এনই