চট্টগ্রামের মিমি সুপার মার্কেটের ২৫৩ দোকান মালিকের বিরুদ্ধে বড় অঙ্কের ভ্যাট ফাঁকির তথ্য মিলেছে। গত ৯ সেপ্টেম্বর ভ্যাট নিরীক্ষা ও গোয়েন্দা অধিদপ্তরের অভিযান-অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ওই মার্কেটের ২০৩ দোকান মালিক কখনোই ভ্যাট নিবন্ধন নেননি। ফলে ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগে এসব দোকান মালিকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করবে ভ্যাট নিরীক্ষা ও গোয়েন্দা অধিদপ্তর।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)-এর একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘চট্টগ্রামের নাসিরাবাদ বায়েজিদ বোস্তামি রোডে তৈরি করা হয়েছে মিমি সুপার মার্কেট। এর দুটি ভবন রয়েছে। একটি এনেক্স বিল্ডিংয়ের চার তলাবিশিষ্ট। অন্যটি তিন তলাবিশিষ্ট। এই সুপার মার্কেটে ২৬৩ দোকান রয়েছে। এর মধ্যে ৬০টি দোকান ১৩ সংখ্যার মূসক নিবন্ধন নম্বর রয়েছে। ভ্যাট নিবন্ধন নেই ২০৩টি দোকানের। মাত্র ২৫টি দোকান মালিক ভ্যাট দেন।’
জানতে চাইলে এই বিষয়ে ভ্যাট নিরীক্ষা ও গোয়েন্দা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান বলেন, ‘চট্টগ্রামের সবচেয়ে বড় মার্কেট এই সুপার মার্কেট। এখানে অনেক ক্রেতা আসেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের অভিযানের সময় যেসব নথি পাওয়া গেছে, সেগুলো যাচাইয়ের সময় বড় অঙ্কের ফাঁকি ধরা পড়েছে।’
ড. মইনুল খান বলেন, ‘আমাদের গোয়েন্দা বিভাগ সক্রিয়। ভ্যাট ফাঁকিবাজদের যেকোনো সময় আইনের মুখোমুখি করা হবে। যারা নিয়মিত ভ্যাট দেন, তাদের যেকোনো সেবা দিতে আমরা প্রস্তুত। এর বাইরে যারা থাকবেন, তাদের আইনের মুখোমুখি হতে হবে।’
ভ্যাট গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, মিমি সুপার মার্কেটটি চট্টগ্রামের কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের পাঁচলাইশ সার্কেলে অবস্থিত। মার্কেটের মধ্যে নিচ তলায় ৫৩, দ্বিতীয় তলায় ৫৮, তৃতীয় তলায় ৫৪, চতুর্থ তলায় ৫৮, এনেক্স ভবনের বর্ধিতাংশের ২য় তলায় ২০ ও ৩য় তলার ২০ দোকান রয়েছে। নিচ তলায় ১৬, ২য় তলায় ৩৭, তয় তলার ৫৪, ৪র্থ তলার ৫৬ দোকানের ভ্যাট নিবন্ধন নেই। ভ্যাট নিবন্ধন নেই এনেক্স ভবনের ২য় ও ৩য় তলার ৪০ দোকানেরও। এসব দোকানের ঘর ভাড়া, কর্মচারীদের বেতন, বিদ্যুৎ বিলসহ অন্যান্য খরচ বাদ দেওয়ার মাসিক লাভ ১ লাখ টাকার বেশি বলেও সূত্র জানায়।
ভ্যাট গোয়েন্দা সূত্রে আরও জানা গেছে, ৫ বছর বা ১০ বছর ধরে ব্যবসা করে আসছে, এমন অনেক প্রতিষ্ঠান ক্রেতাদের কাছ থেকে নিয়মিত ভ্যাট আদায় করলেও সরকারের ফান্ডে কোনো ভ্যাট জমা দেয়নি। এসব দোকান মালিকের বিরুদ্ধে ভ্যাট আইনে মামলা দায়ের করা হবে।