সাড়ে তিন বছর আগে রাজধানীর দারুস সালাম থানা এলাকায় নার্সিং কলেজের কর্মচারী মরিয়ম খাতুনকে হত্যার মামলায় দুই কাঠমিস্ত্রির মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। তারা হলো—অমিত হাসান ও ইউসুফ আলী ওরফে ঠান্ডা।
মঙ্গলবার (২১ সেপ্টেম্বর) ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ ফাতিমা ইমরোজ ক্ষণিকার আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।
এদিন দুই আসামিকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। রায় ঘোষণার পর সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাদের আবার কারাগারে নেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী দেলোয়ার হোসেন।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ৬ মার্চ সকালে মরিয়ম খাতুন এবং তার স্বামী আব্দুল হান্নান অফিসের উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হন। বিকেলে অফিস শেষে মরিয়ম খাতুন বাসায় ফেরেন। পরে আব্দুল হান্নান বাসায় ফিরে মরিয়ম খাতুনের গলাকাটা লাশ কক্ষে পড়ে থাকতে দেখেন।
এ ঘটনায় মরিয়মের ছোট ভাই রেজাউল করিম অজ্ঞাতদের আসামি করে মামলা দায়ের করেন। পরে মরিয়মের ফোনের কললিস্টের সূত্র ধরে অমিত হাসান এবং ইউসুফকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তারা হত্যায় দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেয়।
তাদের জবানবন্দি থেকে জানা যায়, ৪ মার্চ মরিয়ম খাতুন অমিত হাসানকে বাসার আলনা ঠিক করে দেওয়ার জন্য ফোন দেন। ৬ মার্চ আলনা ঠিক করে দেওয়ার কথা জানায় অমিত। তখন আসামিরা পরিকল্পনা করে, মরিয়মকে চাকুর ভয় দেখিয়ে টাকা-পয়সা আদায় করবে। তারা দুটি চাকু কেনে। ৬ মার্চ বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে মরিয়মের ফোন পেয়ে তারা বাসায় যায়। চাকুর ভয় দেখিয়ে তারা মরিয়মকে টাকা, পয়সা, স্বর্ণালংকার বের করে দিতে বলে। ভিকটিম চিৎকার করলে অমিত হাসান পেটে এবং ইউসুফ গলায় আঘাত করে। এতে ঘটনাস্থলে মারা যান মরিয়ম খাতুন।
মামলাটি তদন্ত করে ২০১৮ সালের ৩১ মে দুজনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা দারুস সালাম থানার এসআই মো. যোবায়ের। ওই বছরের ১৩ আগস্ট আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বিচার শুরু করেন আদালত। মামলাটির বিচার চলাকালে আদালত চার্জশিটভুক্ত ২৪ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৭ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।