আদালতের আদেশের তোয়াক্কা না করে এবং নোটিশ ছাড়াই রাজধানীর পল্লবী থানাধীন বাউনিয়া মৌজায় ডিওএইচএস সংলগ্ন হাভেলি প্রপার্টি ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের আলীনগর প্রকল্পে ঢাকা জেলা প্রশাসন আকস্মিক উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছে। মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) এই অভিযান চালানো হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।
প্রকল্প কর্তৃপক্ষ ও প্লট ক্রেতাদের অভিযোগ, প্রকল্পটির পক্ষে উচ্চ আদালতের আদেশ রয়েছে। ঢাকা জেলা প্রশাসন সেই আদেশ অমান্য করেই অভিযান চালিয়েছে। অভিযানের আগে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনও নোটিশও দেওয়া হয়নি। তাছাড়া, রাজধানীসহ সারাদেশে যখন ঈদের ছুটি চলছে, ঠিক সেই সময়টিকে বেছে নিয়ে হঠাৎ এই অভিযানের মাধ্যমে কার বা কাদের স্বার্থ রক্ষার চেষ্টা করা হচ্ছে, তা নিয়ে রহস্য দেখা দিয়েছে।
হাভেলি প্রপার্টি ডেভেলপমেন্ট কর্তৃপক্ষ জানায়, ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি কিনে প্রকল্প করেছে কোম্পানি। যাদের কাছ থেকে জমি কেনা হয়েছে তাদের নামে সিএস, আরএস, এসএ, মহানগর জরিপ এবং খাজনা খারিজসহ যাবতীয় বৈধ কাগজপত্র রয়েছে। জমি কেনার পর কোম্পানি নিজ নামে খাজনা খারিজ করিয়ে নেয়। এরপর অবসরপ্রাপ্ত সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা, ব্যবসায়ীসহ গুরুত্বপূর্ণ লোকজনের কাছে প্লট বিক্রি করেছে কোম্পানি। প্লট ক্রেতারা যথানিয়মে নিজ নামে নামজারি ও খাজনা খারিজ করিয়ে নেন। প্লট ক্রেতাদের কারও কারও ইমারত নির্মাণ চলমান রয়েছে। এমতাবস্থায়, হঠাৎ সেখানে জেলা প্রশাসনের উচ্ছেদ অভিযান নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
জানা গেছে, রহস্যজনক কারণে ৬-৭ মাস আগে এই প্রকল্পে নতুন করে খাজনা খারিজ বন্ধ করে দেয় ঢাকা জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসক মৌখিকভাবে প্রকল্প কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানায়। তবে, এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসন কোনও চিঠি দেয়নি।
বিষয়টির প্রতিকার চেয়ে হাইকোর্টে রিট করে হেভেলি প্রপার্টি ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি। আদালত আদেশে বলেছেন, প্রকল্পের খাজনা খারিজ, মিউটেশন, রেজিস্ট্রেশন এবং ভবন নির্মাণ ও উন্নয়নকাজে বাধা দেওয়া কিংবা উচ্ছেদ করা যাবে না। আদালত একইসঙ্গে প্লট মালিকদের নামে ছাড়পত্র প্রদান করার জন্য ঢাকা জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেন।
পরবর্তীতে আদালতের আদেশ ও নির্দেশনাসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ভূমি মন্ত্রণালয়ে দাখিল করে কোম্পানি। এ ব্যাপারে সরেজমিনে পরিদর্শন করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসককে নির্দেশনা দেয় মন্ত্রণালয়। জেলা প্রশাসন সেই প্রতিবেদন দেওয়ার উদ্যোগ না নিয়ে ঈদের ছুটির মধ্যে রহস্যজনকভাবে উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে প্রকল্পের প্রাচীরসহ বিভিন্ন স্থাপনা ভেঙে দিয়েছে।
এ ব্যাপারে ঢাকা জেলা প্রশাসক মো. আনিসুর রহমানের বক্তব্য জানতে বারবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।