আইন ও অপরাধ

চাকরির লোভ দেখিয়ে তরুণীকে ধর্ষণ করেন নিউটন: র‌্যাব 

দরিদ্রতার সুযোগ নিয়ে চাকরির লোভ দেখিয়ে এক তরুণীকে ধর্ষণ করেন বাংলাদেশ জুজুৎসু অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম নিউটন। গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তা স্বীকার করেছেন তিনি।

শনিবার (১৮ মে) সন্ধ্যায় রাজধানীর কারওয়ানবাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারের সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক আরাফাত ইসলাম।

তিনি বলেছেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নিউটন ও তার সহযোগীকে রাজধানীর শাহ আলী ও মিরপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করে ঘটনার বিস্তারিত জানা গেছে। 

আরাফাত ইসলাম বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, গ্রেপ্তারকৃত রফিকুল ইসলাম ওরফে নিউটন জুজুৎসু খেলার প্রশিক্ষক। তিনি রাজধানীর শ্যামলীতে অবস্থিত বাংলাদেশ জুজুৎসু অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। অ্যাসোসিয়শনের অধিকাংশ প্রশিক্ষণার্থী নারী। অভিভাবক হিসেবে এই কোমলমতি মেয়েদের এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে দায়িত্ব পালন করার কথা ছিল তার। কিন্তু, এই ব্যক্তি কোমলমতি মেয়েদের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে তার হীন স্বার্থ চরিতার্থ করার প্রয়াস চালায়। নিউটন অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদকের মতো পদে থেকে প্রশিক্ষণার্থীদের ভালো অবস্থানে নিয়ে যাওয়া এবং বিদেশ ভ্রমণের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ ও শারীরিক নির্যাতনের মতো অপকর্ম করতেন। তিনি অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়ে খেলোয়াড়দের সঙ্গে অনৈতিক কার্যকলাপের কারণে গর্ভবতী হলে তাদের গর্ভপাত করানোর মতো ভয়ঙ্কর কাজও করেছেন। এমনকি অনুশীলনের আগে মেয়েদের পোশাক পরিবর্তনের কক্ষে প্রবেশ করে তাদের জোরপূর্বক ধর্ষণ করে ভিডিও ধারণ ও নগ্ন ছবি তুলে রাখতেন। পরবর্তীতে নগ্ন ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে বারবার ধর্ষণ করতেন। 

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, নিউটন গ্রেপ্তারকৃত অপর এক নারী খেলোয়াড়ের সহায়তায় অন্য নারী খেলোয়াড়দের মিথ্যা প্রলোভন ও ভয় দেখিয়ে যৌন হয়রানিসহ জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্ক করত। ভিকটিম (অভিযোগকারী তরুণী) দুই বছর ধরে নিউটনের অধীনে জুজুৎসু খেলার প্রশিক্ষণ নিচ্ছিলেন। প্রশিক্ষণের সময় নিউটন বিভিন্ন অজুহাতে ভিকটিমকে শারীরিকভাবে হেনস্তা করতেন। পরবর্তীতে ওই প্র্যাকটিস শেষে চেঞ্জিং রুমে পোশাক পরিবর্তন করার সময় গ্রেপ্তারকৃত নারী খেলোয়াড় ভিকটিমকে রুমের মধ্যে আটকে রেখে নিউটনকে ডেকে আনেন এবং নিউটন ধর্ষণ করেন। পরবর্তীতে গ্রেপ্তাকৃত নারী খেলোয়াড় রুমে প্রবেশ করে মোবাইল ফোনে ভিকটিমের নগ্ন ছবি ধারণ করেন এবং কাউকে জানালে ভিকটিমের নগ্ন ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেন। ওই ঘটনার পর নিউটন ভিকটিমের নগ্ন ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে রাজধানীর একটি ফ্ল্যাটে নিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করেন। উক্ত ঘটনায় ভিকটিম মামলায় দায়ের করলে নিউটন ও তার সহযোগী নারী খেলোয়াড় গ্রেপ্তার এড়াতে অবস্থান পরিবর্তন করে আত্মগোপন করেন। আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় তাদের গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। মামলার এজাহার নামীয় ২ নম্বর আসামি অভিযুক্ত নারী খেলোয়াড়কে ইতোমধ্যে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।