আইন ও অপরাধ

ঈদযাত্রায় বাড়তি ভাড়া নিলে ব্যবস্থা: ডিএমপি

ঈদযাত্রীদের কাছ থেকে বাড়তি ভাড়া নেওয়া হলে বাসমালিক ও সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ার করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মো. মুনিবুর রহমান। 

বুধবার (১২ জুন) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে ঈদুল আজহা উপলক্ষে ট্রাফিক নির্দেশনা সংক্রান্ত সংবাদ সম্মেলনে এ হুঁশিয়ারি দেন তিনি। 

প্রতি ঈদে যাত্রীদের কাছ থেকে বাড়তি ভাড়া আদায় করা হয়, এ বিষয়ে পুলিশ কী ব্যবস্থা নেবে? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মো. মুনিবুর রহমান বলেন, আপনারা জানেন যে, প্রতিটি বাস টার্মিনালে সার্ভিলেন্স টিম রয়েছে। সেখানে পুলিশের প্রতিনিধি, বিআরটিএ’র প্রতিনিধি, সিটি কর্পোরেশনের প্রতিনিধি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট থাকে। চার্ট অনুযায়ী ভাড়া আদায় হচ্ছে কি না, তা দেখভালের জন্য সার্ভিলেন্স টিম আছে। পাশাপাশি, ভ্রাম্যমাণ আদালত থাকে। অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ পেলে কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা গ্রহণ করে। 

ঈদের সময় লোকাল বাসগুলো যাত্রী নিয়ে ঢাকার বাইরে যাচ্ছে, এ বিষয়ে পুলিশ কী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ঈদের সময় কোনো লোকাল বাস যাত্রী নিয়ে ঢাকার বাইরে গেলে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে। এর ভিত্তিতে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। রুট পারমিট ও ফিটনেসবিহীন গাড়ি শনাক্ত করা হলে, তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

সংবাদ সম্মেলনে মো. মুনিবুর রহমান আরও বলেন, ঢাকা মহানগরীতে বাস টার্মিনাল ও আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল ছাড়া সড়কের কোথাও দাঁড়িয়ে দূরপাল্লার পরিবহনগুলো যাত্রী তুলতে বা নামাতে পারবে না। এ বিষয়টি নিশ্চিত করতে পরিবহন মালিকদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করে তাদেরকে সঠিক নির্দেশনা মেনে ব্যবস্থা নিতে আহ্বান জানিয়েছি। ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া দূরপাল্লার বাসগুলোতে অতিরিক্ত যাত্রী ও অতিরিক্ত মালামাল বহন করা যাবে না। বাসের ছাদে যাত্রী বহন করা যাবে না, এটা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। 

তিনি বলেন, ঈদ উপলক্ষে লঞ্চ টার্মিনালগুলোতে যাত্রীদের যাতে কোনো ভোগান্তি সৃষ্টি না হয়, সে বিষয়ে ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ সতর্ক রয়েছে। 

ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) বলেন, যারা মোটরসাইকেল চালিয়ে দূর-দূরান্তে যাবেন, প্রত্যন্ত অঞ্চলে যাবেন, তাদেরকে সার্বক্ষণিকভাবে হেলমেট পরার অনুরোধ করছি। একই সঙ্গে সড়কে চলাচলে গতিসীমা অবশ্যই মেনে চলার জন্য অনুরোধ করছি। 

তিনি বলেন, ঈদ উপলক্ষে অতিরিক্ত লাভের আশায় রুট পারমিটবিহীন বা অনুমোদনহীন কোনো পরিবহন যাতে রাজধানীতে চলাচল না করতে পারে, সে বিষয়টি কঠোরভাবে ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ মনিটরিং করবে৷ এ বিষয়ে কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

মুনিবুর রহমান বলেন, রাজধানীর এন্ট্রি ও এক্সিট পয়েন্টগুলোতে যাতে যানজট সৃষ্টি না হয়, সে বিষয়ে ট্রাফিক বিভাগ মনিটরিং করছে। এই পয়েন্টগুলোর মধ্যে হাইওয়ে পুলিশ, জেলা পুলিশ এবং ডিএমপি সমন্বয় করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। 

পশুবাহী গাড়ির জন্য নির্দেশনা:  মুনিবুর রহমান বলেন, কোরবানির পশুবাহী গাড়িগুলোকে অবশ্যই সিটি কর্পোরেশনের অনুমোদিত হাটে যেতে হবে এবং অবশ্যই হাটের ভেতরে পশু লোড-আনলোড করতে হবে। কোনোক্রমেই তারা সড়কে লোড-আনলোড করতে পারবে না। 

কোরবানির পশুবাহী যানবাহনকে অবশ্যই অগ্রাধিকার দিতে হবে, উল্লেখ করে মুনিবুর রহমান বলেন, পশুবাহী ট্রাক বা গাড়িকে কোনো প্রকার হয়রানি করা যাবে না। অবশ্যই পশুবাহী ট্রাকের সামনে নির্ধারিত হাটে যাওয়ার স্টিকার-ব্যানার লাগাতে হবে। যদি কেউ হাটে যাওয়ার আগেই পশুবাহী গাড়িকে থামিয়ে অন্য হাটে প্রবেশ করানোর চেষ্টা করে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব। 

‘বাস টার্মিনাল ও পশুরহাটকেন্দ্রিক নজরদারি অতীতেও ছিল এবারও থাকবে। গাবতলী ও মহাখালী পশুর হাট ছাড়াও সব পশুর হাটে আমাদের ওয়াচ টাওয়ার স্থাপন করা হয়েছে। এই ওয়াচ টাওয়ারের মাধ্যমে আমরা সার্বিক বিষয় পর্যবেক্ষণ করব,’ যোগ করেন তিনি।