পুলিশেরর সাবেক মহারিদর্শক বেনজীর আহমেদ ও তার স্ত্রী-সন্তানের নামে কেনা গুলশানের যে চারটি ফ্ল্যাট ক্রোকের আদেশ দেওয়া হয়েছে- সেগুলোর চাবি রয়েছে তার কাছে। এজন্য দুদক সেখানে প্রবেশ করতে পারছে না। সেখানে প্রবেশ করতে একজন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করেছেন আদালত।
রোববার (৩০ জুন) ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেনের আদালত দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন। এর আগে ওই ফ্ল্যাটে প্রবেশের জন্য গেলেও চাবি না থাকায় দেখভালে নিয়োজিত দুদক কর্মকর্তা ফিরে আসেন। দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর এ তথ্য জানিয়েছেন।
জানা গেছে, দুদকের পরিচালক মো. মঞ্জুর মোর্শেদ পরিচালক (সম্পদ ব্যবস্থাপনা ইউনিট) সংশ্লিষ্ট ফ্ল্যাটসমূহে অভিযোগসংশ্লিষ্ট ব্যক্তির অনুপস্থিতিতে বিনা বাধায় ফ্ল্যাটে রিসিভারের প্রবেশ, মালামালের ইনভেন্টরি, স্পেসের পরিমাপপূর্বক ভাড়া নির্ধারণ করার বিষয়ে সদয় আদেশ-নির্দেশনা চেয়ে আবেদন করেন। পরে দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর এ বিষয়ে শুনানি করেন। শুনানি শেষে আদালত ফ্ল্যাটে প্রবেশে একজন প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করেন। তার উপস্থিতিতে ফ্ল্যাটে প্রবেশ করবেন চারটি ফ্ল্যাটের দেখভালে নিয়োজিত থাকা দুদক কর্মকর্তা।
দুদকের আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি সাবেক পুলিশ মহারিদর্শক বেনজীর আহমেদ ও তার স্ত্রী-সন্তানের নামে ক্রয়কৃত গুলশান-১ এ অবস্থিত রাংকন আইকোন টাওয়ারের চারটি ফ্ল্যাটের সঠিক নিয়ন্ত্রণ, ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য দুদকের পরিচালককে (সম্পদ ব্যবস্থাপনা ইউনিট) রিসিভার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। এ আদেশ পাওয়ার পর পরিচালক (সম্পদ ব্যবস্থাপনা) একটি টিমসহ গত ১৩ জুন সংশ্লিষ্ট বিল্ডিং এর ফ্ল্যাটসমূহ পরিদর্শনে যান। এ ভবনের নীচতলায় রিসেপশনিস্ট মেহরাব হোসেন অপির সাথে আলাপ করে জানা যায়, অভিযোগসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এ ফ্ল্যাটসমূহে বসবাস করেন না। ভবনের ম্যানেজার জসিমকে ভবনে পাওয়া যায়নি। পরে ফোন করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
পরিদর্শনকালে আরও জানা যায়, সংশ্লিষ্ট ভবনের ১৩ ও ১৪ তলায় ডুপ্লেক্স আকারে ৯ হাজার বর্গফুটের অধিক স্পেস নিয়ে ৪টি ফ্ল্যাট রয়েছে। ফ্ল্যাটসমূহের চাবি অভিযোগসংশ্লিষ্ট ব্যক্তির নিকট রয়েছে। তবে বর্তমানে তিনি এ ভবনে বসবাস করেন না এবং কোথায় গেছেন তা কেউ বলতে পারেন না বলে রিসেপশনিস্ট জানান। সংশ্লিষ্ট ফ্ল্যাটসমূহ রক্ষণাবেক্ষণ কাজে যেসব সার্ভিস চার্জ, ইলেকট্রিসিটি বিল, পানি ও গ্যাস বিলসহ অন্যান্য কিছু বিষয়ে আর্থিক খরচের বিষয়াদি রয়েছে। সংশ্লিষ্ট ফ্ল্যাটসমূহ ভাড়া প্রদান করতে হলে ওই ফ্ল্যাটসমূহ খুলতে হবে এবং এর বাণিজ্যিক-আবাসিক ভাড়ার হার নিরূপণ করার জন্য গণপূর্ত বিভাগের মাধ্যমে জায়গা পরিমাপ করা প্রয়োজন। এছাড়া উক্ত ফ্ল্যাট-ফ্ল্যাটসমূহের অভ্যন্তরে অভিযোগসংশ্লিষ্ট ব্যক্তির ব্যবহৃত জিনিসপত্রের একটি তালিকা, ইনভেন্ট্রি করার জন্য একজন প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেওয়া প্রয়োজন।