আইন ও অপরাধ

রাজধানীর ২০ পয়েন্টে যান চলাচল বন্ধ, ভোগান্তি চরমে

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের এক দফা দাবিতে মঙ্গলবারও উত্তাল রাজধানী ঢাকা। নগরীর বিভিন্ন স্থানে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছেন ঢাকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সড়ক অবরোধের কারণে রাজধানীর অন্তত ২০টি পয়েন্টে যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। সড়কগুলোতে শত শত যানবাহন আটকা থাকায় ভোগান্তিতে পড়েন হাজারো যাত্রী।

মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) সকাল থেকে অন্তত ১৪টি কলেজ ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত কয়েক হাজার শিক্ষার্থীরা সড়কে নেমে আন্দোলন করছেন। এর মধ্যে রাজধানীর নতুন বাজারে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া রাজধানীর সায়েন্সল্যাব মোড়, গাবতলী-মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ, মধ্যবাড্ডা থেকে শুরু করে নদ্দা/বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা, কুড়িল বিশ্বরোড, মহাখালী-বনানী সড়কসহ বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিয়ে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।

এ সময় শিক্ষার্থীরা স্লোগান দিতে থাকেন, বন্ধ করো অত্যাচার ফিরিয়ে দাও অধিকার, পুলিশ দিয়ে আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না, ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা, লাঠিসোঁটা, টিয়ার গ্যাস, জবাব দেবে বাংলাদেশ’।

সায়েন্সল্যাব মোড়ে ঢাকা কলেজ ও সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা, গাবতলী-মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ এলাকায় ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস (ইউল্যাব), নতুন বাজার/সাতারকুল এলাকায় ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (ইউআইইউ), মধ্যবাড্ডায় ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি, নদ্দা/বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার গেটে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি, কুড়িল বিশ্বরোডে আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ (এআইইউবি), মিরপুর ১০ নম্বর মোড়ে বিইউবিটি ও মিরপুর বাঙলা কলেজ, মহাখালী-বনানী সড়কে প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, উত্তরায় সাধারণ শিক্ষার্থী, তাঁতীবাজার এলাকায় সাধারণ শিক্ষার্থী, বেইলিরোড মোড়ে সাধারণ শিক্ষার্থী এবং বাসাবো বৌদ্ধ মন্দির এলাকায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।

ডিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি-মিডিয়া) মো. ফারুক হোসেন জানান, সকাল থেকে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধের ফলে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এক্ষেত্রে পুলিশ সদস্যরা অত্যন্ত ধৈর্যের সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করার চেষ্টা করছেন।

উল্লেখ্য, রোববার (১৪ জুলাই) চীন সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কোটা সংস্কার আন্দোলন প্রসঙ্গে করা এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন ‘মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এত ক্ষোভ কেন? মুক্তিযোদ্ধার নাতিপুতিরা কিছুই পাবে না, তাহলে কি রাজাকারের নাতিপুতিরা সব পাবে?’। প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ‘রাজাকারের বাচ্চা বা নাতিপুতি’ বলা হয়েছে অভিযোগ করে রোববার রাত থেকে প্রতিবাদ শুরু করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এরপর আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে রাজধানীজুড়ে।