আইন ও অপরাধ

যুবককে পিটিয়ে হত্যা: দোষ স্বীকার করে কারাগারে ঢাবির ৬ শিক্ষার্থী

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে তোফাজ্জল নামে মানসিক ভারসাম্যহীন এক যুবককে হত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয় শিক্ষার্থী আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। তাদেরকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার সাব-ইন্সপেক্টর আমিনুল ইসলাম ওই ছয় শিক্ষার্থীকে আদালতে হাজির করেন। তারা স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হওয়ায় তা রেকর্ড করার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাদ্দাম হোসেনের আদালত তাদের জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এর পর তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।

ওই ছয় শিক্ষার্থী হলেন—ফজলুল হক হল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক উপ-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক এবং পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মো. জালাল মিয়া (২৫); মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষার্থী সুমন মিয়া (২১), পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের মো. মোত্তাকিন সাকিন, ভূগোল বিভাগের আল হোসেন সাজ্জাদ এবং  ওই হলের আবাসিক শিক্ষার্থী আহসান উল্লাহ ও ওয়াজিবুল আলম।

বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শাহবাগ থানায় আসামিদের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট অফিসের সুপারভাইজার মোহাম্মদ আমানুল্লাহ। পরে ছয় শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়।

মামলার এজাহারে মোহাম্মদ আমানুল্লাহ উল্লেখ করেন, ১৮ সেপ্টেম্বর রাত পৌনে ৮টার দিকে একজন যুবক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলের গেটে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করছিলেন। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্র তাকে আটক করে প্রথমে ফজলুল হক মুসলিম হলের মূল ভবনের গেস্ট রুমে নিয়ে যান। মোবাইল চুরির অভিযোগে ছাত্ররা ওই যুবককে এলোপাথারি চর-থাপ্পড় ও কিল-ঘুষি মারেন। জিজ্ঞাসাবাদে ওই যুবক জানান, তার নাম তোফাজ্জল। তোফাজ্জল মানসিক রোগী, এটা বুঝতে পেরে তাকে হলের ক্যান্টিনে নিয়ে খাবার খাওয়ান ছাত্ররা। এর পর তোফাজ্জলকে হলের দক্ষিণ ভবনের গেস্ট রুমে নিয়ে জানালার সঙ্গে হাত বেঁধে স্ট্যাম্প, হকিস্টিক ও লাঠি দিয়ে মারধর করেন উচ্ছৃঙ্খল কিছু ছাত্র। এতে তিনি অচেতন হয়ে পড়েন। তোফাজ্জলের বাড়ি বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার কাঁঠালতলী ইউনিয়নে।