আওয়ামী লীগ সরকার আমলে ক্ষমতার অপব্যবহার করে অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে শুধু গাড়ি-বাড়ির মালিক নয়, সম্পদের পাহাড় গড়েছেন দলটির সাবেক দুই এমপি ও পুলিশের এক সাবেক ডিআইজি।
তারা হলেন— যশোর ৬ আসনের সাবেক এমপি মো. শাহীন চাকলাদার, নোয়াখালী-১ আসনের সাবেক এমপি এইচএম ইব্রাহিম ও রাজশাহীর সাবেক ডিআইজি মো. আব্দুল বাতেন।
ক্ষমতার অপব্যবহার করে দুই সাবেক এমপি ও সাবেক পুলিশ কর্মকর্তার অবৈধ সম্পদের প্রাথমিক তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন।
রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) কমিশনের ডেপুটি ডিরেক্টর আকতারুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, যশোর ৬ আসনের (সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান, যশোর উপজেলা পরিষদ) সাবেক সংসদ সদস্য শাহীন চাকলাদার ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। মূলত তিনি একজন ঠিকাদার ছিলেন। রাজনৈতিক আধিপত্য কাজে লাগিয়ে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন। তার নামে যশোর চিত্রাড় মোড়ে যাবির ইন্টারন্যাশনাল নামে ২২ তলা বিশিষ্ট পাঁচ তারকা হোটেল এবং কাঁঠাল তলায় ‘হোয়াইট হাউস’ নামে সুরম্য অট্টালিকা রয়েছে। তিনি অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে নিজ ও আত্মীয়-স্বজনের নামে দেশে-বিদেশে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। তার অবৈধভাবে অর্জিত জ্ঞাত-আয় বহির্ভূত সম্পদ রয়েছে মর্মে গোয়েন্দা তথ্যানুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে সঠিক পরিলক্ষিত হওয়ায় প্রকাশ্য অনুসন্ধানের জন্য কমিশন কর্তৃক সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
নোয়াখালী-১ আসনের সাবেক এমপি এইচএম ইব্রাহিমের নিজ নামে ১৬ কোটি ১৪ লাখ ৫৫ হাজার ৭৯ টাকার অস্থাবর সম্পদ এবং তার স্ত্রীর নামে ৩ কোটি ৬৫ লাখ ৫২ হাজার ৫৫ টাকার অস্থাবর সম্পদ এবং ২ কোটি ৬৫ লাখ ১৩ হাজার ৬০০ টাকার স্থাবর সম্পদসহ মোট ২২ কোটি ৪৫ লাখ ২০ হাজার ৭৩৪ টাকার সম্পদ রয়েছে।
তার অবৈধভাবে অর্জিত জ্ঞাত-আয় বহির্ভূত সম্পদ রয়েছে বলে গোয়েন্দা তথ্যানুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে সঠিক পরিলক্ষিত হওয়ায় প্রকাশ্য অনুসন্ধানের জন্য কমিশন কর্তৃক সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
রাজশাহীর সাবেক ডিআইজি মো. আব্দুল বাতেন, ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। তার নিজ নামে ৫০৪/২, রোকেয়া টাওয়ার, ৯৮ বড় মগবাজার, রমনায় কোটি টাকার ফ্ল্যাট, ধানমন্ডি, বারিধারা, গুলশান, সিদ্ধেশ্বরীতে ফ্ল্যাট এবং স্ত্রীর নামে পূর্বাচলে প্লট, পুলিশ হাউজিং সোসাইটিতে বিনিয়োগসহ বিভিন্ন ব্যাংকে প্রচুর টাকা জমা রয়েছে।
তিনি দেশে-বিদেশে বিপুল সম্পদ স্বনামে-বেনামে ক্রয় করে রেখেছেন। তার অবৈধভাবে অর্জিত জ্ঞাত-আয় বহির্ভূত সম্পদ রয়েছে মর্মে গোয়েন্দা তথ্যানুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে সঠিক পরিলক্ষিত হওয়ায় প্রকাশ্য অনুসন্ধানের জন্য কমিশন সিদ্ধান্ত নেয়।