আইন ও অপরাধ

‘ভেবেছিলাম কিল মেরেছে, পরে দেখি রক্ত পড়ছে’

গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেকটা ভেঙে পড়ে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বেশ কিছু সদস্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তা না পেলে চাকরিতে যোগ দিতে অনীহা প্রকাশ করেন। অন্তবর্তীকালীন সরকারের কাছ থেকে আশ্বস্ত হয়ে ধীরে ধীরে চাকরিতে যোগ দেন তারা। তবে অভিযোগ রয়েছে ট্রাফিক পুলিশ আগের তুলনায় কম সক্রিয়। এর মধ্যে দায়িত্ব পালনকালে রাজধানীতে এক ট্রাফিক পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে জখম করা হয়।

গত ১৩ সেপ্টেম্বর রাত সোয়া ৯টার দিকে যাত্রাবাড়ী থানার জনপদ মোড়ে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশ কনস্টেবল আশ্রাফ আলীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় তিনি ১৮ সেপ্টেম্বর জাহিদ হাসান ও সুমন নামে দুজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। ওই দিনই তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

পরদিন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা যাত্রাবাড়ী থানার উপ-পরিদর্শক মোজাহিদুল ইসলাম দুই আসামিকে আদালতে হাজির করে সাত দিন করে রিমান্ড আবেদন করেন। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আরিফুর রহমানের আদালতে রিমান্ডের বিষয়ে শুনানি হয়। আসামি পক্ষের আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষ এর বিরোধীতা করে। এরপর এক আসামি দাবি করেন ওই ঘটনার ভিডিও ফুটেজে তাকে দেখা যায়নি। পরে আদালত আসামিদের কারাগারে পাঠিয়ে আজ ২৪ সেপ্টেম্বর রিমান্ডের বিষয়ে শুনানির তারিখ ধার্য করেন। এদিন তদন্ত কর্মকর্তাকে ফুটেজ সরবরাহের নির্দেশ দেন আদালত। আজ রিমান্ডের বিষয়ে শুনানির দিন ধার্য রয়েছে।

এ বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তা মোজাহিদুল ইসলাম বলেন, মামলার তদন্ত চলছে। দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে ব্যস্ততা দেখি এ বিষয়ে বিস্তারিত কথা বলতে অনিহা প্রকাশ করেন।

হামলার শিকার আশ্রাফ আলী বলেন, জানা মতে, আমার কোনো শত্রু ছিলো না। প্রতিদিনের মতো সেদিনও ডিউটিতে ছিলাম। রাত ৯টার পর দাঁড়িয়ে ছিলাম। হঠাৎ পেছন থেকে কেউ এসে আঘাত করে। প্রথমে ভেবেছিলাম কিল মেরেছে। পরে পিঠে হাত দিয়ে দেখি রক্ত পড়ছে। ১৩ তারিখ থেকে হাসপাতালে আছি। সুস্থ হলে কাজে ফিরবো।

আসামি জাহিদের আইনজীবী ইমরুল হাসান বলেন, জাহিদের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি বলেছেন, ঘটনার সময় বাসায় ঘুমিয়ে ছিলেন। তদন্ত কর্মকর্তা বলছেন, সিসিটিভিতে তাকে দেখা গেছে। আদালত তাকে ভিডিও ফুটেজ সরবরাহ করতে বলেছেন। দেখা যাক, তদন্ত কর্মকর্তা কী করেন।

উল্লেখ্য, গত ১৩ সেপ্টেম্বর রাত সোয়া ৯টার দিকে যাত্রাবাড়ী থানার জনপদ মোড়ে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশের কনস্টেবল আশ্রাফ আলীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে দুর্বৃত্তরা। রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাকে একটা অপারেশন করা হয়। বর্তমানে তিনি রাজারবাগে কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। এরই মাঝে ১৮ সেপ্টেম্বর আশ্রাফ আলী ওই দুই জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন।