আইন ও অপরাধ

‘দুই কোটি মানুষকেই ধরবে?’

অভিনেতা আরশ খান বলেছেন, ‘বাংলাদেশে দুইটা বড় দল। বরাবরই সবাই সাপোর্ট করে আসছে। কেউ হয়তোবা সরাসরি ইনভল্ব ছিল। এখন একটা দলের সাথে দুই কোটি মানুষ কাজ করলে, দুই কোটি মানুষকেই ধরবে?’

মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) নির্মাতা রিংকুকে গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে আদালত পাড়ায় সাংবাদিকদের এ কথা বলেন অভিনেতা আরশ খান।

আরশ খান সাংবাদিকদের বলেন, ‘একটা থানায় হত্যা মামলা হয়েছে। যেখানে ৬৮ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। ৪০০/৫০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। মামলায় তার নাম নেই। কিন্তু তাকে অ্যারেস্ট করে আনা হয়েছে। কারণ, একটা সময় আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলো। এমনকি সে সাবেক সেটাও উল্লেখ করা হয়েছে। বাংলাদেশে দুইটায় বড় দল। বরাবরই সবাই সাপোর্ট করে আসছে। কেউ হয়তোবা সরাসরি ইনভল্ব ছিলো। এখন একটা দলের সাথে দুই কোটি মানুষ কাজ করলে, দুই কোটি মানুষকেই ধরবে? দেখতে হবে ওই সময়ে কারা রাস্তায় ছিলো। কারা নেমে খুন করেছে। তিনি হত্যার সাথে জড়িত না। কারণ, নিজে আন্দোলনে ফ্রন্ট লাইনে ছিলাম।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘২২ জুলাই ডিরেক্টর নীরবকে অ্যারেস্ট করা হয়। সে ডিবি অফিসে ছিল ৮ দিন। এরপর জেলেও যায়। ৫ আগস্টের পর সে জামিন পায়। সে জেলে যাওয়ার পর রিংকু ভাই আমাদের সাপোর্ট করেছে। প্রোপার বিচার চায়। সন্দেহের বশে হুট করে একজনকে ধরে এনে মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে চালান না করা হোক। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা হোক। তদন্ত না করে একজনকে যদি হুটহাট করে ফাঁসিয়ে দেন বিকজ কোন একটা সময় দলের সাথে ছিলো দিস ইস রং। অনেক পুলিশকেও দেখেছি ছেলের সাথে আন্দোলনে এসেছে। এখন উনি পুলিশ বলে কি বাংলাদেশের সকল পুলিশকে অ্যারেস্ট করবে?’

অপর অভিনেতা এস এম আশরাফুল আলম সোহাগ বলেন, ‘তাকে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তিনি হত্যার সাথে জড়িত না। এজাহারভূক্ত আসামিও না। আগে আওয়ামী লীগের রাজনীতির প্রতি সমর্থন ছিল। আমরা জানতামও না। গ্রেপ্তারের পর জেনেছি।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা আতঙ্কিত না। সমাজ বা দেশের জন্য আমরা ক্ষতিকারক কেউ না। আমরা মানুষকে বিনোদিত করে থাকি। মানুষকে আনন্দ দিয়ে থাকি। আমরা আতঙ্কিত না। তবে একটু ভারাক্রান্ত যে আমাদের প্রিয় নির্মাতাকে হত্যা মামলায় জড়িত করা হয়েছে। মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। কোনোভাবেই সে জড়িত না। আমাদের চাওয়া বিজ্ঞ আদালত যেন তাকে জামিন দেন।’

উল্লেখ্য, গতকাল সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) রাতে রিংকুকে গ্রেপ্তার করে গুলশান থানা পুলিশ। নির্মাতা রিংকু পরিচালনার পাশাপাশি রাজনীতির সঙ্গেও জড়িত। তিনি একসময় ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় রাজধানীর গুলশানে নাইমুর রহমান নামে এক শিক্ষার্থী হত্যা মামলায় মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করে পুলিশ। রিংকুর পক্ষে তার আইনজীবী জামিন আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষ এর বিরোধীতা করেন। 

আদালত ঢাকার অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ছানাউল্যাহর আদালত তাকে কারাগারে পাঠিয়ে তদন্ত কর্মকর্তার উপস্থিতিতে আগামি বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) জামিন শুনানির জন্য রেখেছেন। 

শুনানিকালে রিংকু আদালতকে বলেন, ‘এখানে অনেক নির্মাতা আছেন যাদের সাথে আমি আন্দোলনে ছিলাম। শাহবাগ, টিএসসি, শহীদ মিনারে ছিলাম। আমার গ্রামের বাড়ি নোয়াখালী থেকেও লোকজন আন্দোলনে এসেছিল। তাদের মধ্যে দু’জনকে আমার বাসায় আশ্রয় দিয়েছি। রাজপথে থেকে আন্দোলন করেছি। ১৮ জুলাই আবু সাঈদতে নিয়েও পোস্ট দিয়েছি।’

এদিন চয়নিকা চৌধুরী, দীপংকর দীপকসহ তার আরও সহকর্মীরা আদালতে হাজির হন।